নিকলী সদর উপজেলার ধুপাহাটি গ্রামের পিতা মৃত হোমিওপ্যাথিক ডাঃ রাখাল সুত্রধরের ছেলে অর্জুন সুত্রধর।একদিন তাঁর স্বপ্ন ছিল পড়া লেখা করে সোনার মানুষ হয়ে বাবা, মায়ের দুঃখ ঘোচাবে কিন্তু সংসারের অভাবের তাড়নায় শিক্ষা জীবনের অবসান ঘটিয়ে ১৯৮১ সালে ভারতের আগরতলার ( কুয়াই) এবং ২০০৫ সালে দুবাইয়ের (দেরা) শহরে রুটি রোজীর জন্য ফার্নিচারের কাজে আত্মা নিয়োগ করে । বিদেশের মাটিতে দীর্ঘ সময় উন্নত মানের ফার্নিচারের৷ কারু কাজ রপ্তকরে ২০১২ সালে দেশে চলে আসেন, কিছুদিন পর নিকলীর পুরান বাজার রোডে মা,ফার্নিচার এন্ড উড ফ্যাশন নামের কারখানায় খোলে বসে।
তার হাতের বিভিন্ন নান্দনিক ডিজাইনের নকশী করা খাট, সোফা, শো’কেস ,আলনা, ড্রেসিংটেবিল যার চোখেই একবার পড়েছে, সে ব্যাক্তি আজ না, হয় কাল ফার্নিচারের অর্ডার নিয়ে তার কারখানায় এসেছেন । কারখানার উপার্জন দিয়ে দাদার পরিবারের দিনকালও ভালো ভাবেই যাচ্ছিল । এ পেশার মাধ্যমেই চলে অর্জুনদার সংসার । তার পরিবার রয়েছে স্ত্রী, তিন মেয়ে, বড় মেয়ে অর্না সুত্রধর কিশোরগঞ্জ সরকারি গুরুদয়াল কলেজে দর্শন বিভাগের অনার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী, ২য় মেয়ে আবৃতি সুত্রধর নিকলী শহীদ স্মরণিকা বালিকা বিদ্যালয়ের, বিজ্ঞান শাখার ছাত্রী, ছোট মেয়ে চৈতী সুত্রধর নিকলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন কোমল মতি শিক্ষার্থী ।
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তার কারখানায় সরজমিনে গিয়ে ব্যাবসা নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে সময়ে বাজারে নিত্যপন্যের যে মুল্যে সে অনুপাতে আমি ভালো নেই। ফার্নিচারের মাধ্যমে আমি যে অর্থ উপার্জন করি তা, দিয়ে মেয়েদের পড়া লেখা এবং সংসারের খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন আগের মত কাজের অর্ডার নেই। তাছাড়া ফার্নিচারের সামগ্রীর চাহিদা কমে আসছে, আমাদের গ্রাম গঞ্জের হাট বাজারে প্লাস্টিকের নানা সামগ্রী যা কাঠের জায়গা দখলে নিয়ে যাচ্ছে। অসাধু ফার্নিচার ব্যাবসায়ীদের দৌরাত্মও কম নয়,অল্প টাকায় অর্ডার নিয়ে মানহীন কাঠ দিয়ে এ মার্কেটের দুর্নাম বাজারে কম নয়। এ ব্যাবসা এখন আর আগের মতনেই কোন ভাবেই হিসাব মেলাতে পারছি না। দিনদিন লোকসান বেড়েই চলছে । কারণ ভালো কাঠের জিনিসের অর্ডার নিয়ে ক্রেতার সাথে প্রতারণা করতে পারিনা। সংসার ধরে রাখতে আবারো হয়তো দেশ ত্যাগ করেবিদেশের মাটিতে পাড়ি জমাতে হতে পারে। ঋণের বোঝা আর সইতে পারছি না।