নাজিরপুরে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ আওয়ামী নেতা শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্তে ইউএনও
- আপডেট সময় : ০৮:৪২:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ৭২৬ বার পড়া হয়েছে
পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউ জে কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আশিষ মন্ডলের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম নিয়ে ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পবিত্র কুরআন ও হযরত মুহাম্মদ (স:) এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি মূলক আলোচানা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষক আশিষ মন্ডল উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের পাজরাপাড়া গ্রামের নির্মল মন্ডলের ছেলে এবং আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা। সে ২০১৫ সালে শ্রীরামকাঠী ইউজেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন।
অভিযোগে দেখা যায়, গত ২০২৩ সালে সপ্তম শ্রেনীর ক্লাসে হযরত মুহাম্মদ (সা: ) সম্পর্কে কটুক্তিমূলক আলোচনা পেশ করেন,তখন শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্দ হয়। পরবর্তীতে তারা বিষয়টি অভিভাবকদের সাথে আলাপ করে এঘটনায় অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণ বিক্ষুব্দ হয়ে তার বিচারের দাবী জানায়, এ সময় তিনি ৩ থেকে ৪ মাসের মত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে। তার কিছুদিন পরে বিদ্যালয়ে ফিরে এসে এক ছাত্রীকে নিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে আবারও ২ মাসের মত আত্মগোপনে চলে যায়।
এ বিষয়ে ওই স্কুলের অফিস সহকারি মো: আরিফুল ইসলাম খান জানান, গত জুন মাসে সপ্তম শ্রেনীর ক্লাসে হিজড়া-বেদে সম্প্রদায়ের আলোচনাকে কেন্দ্র করে হঠাৎ মুসলিম সম্প্রদয় নিয়ে আলোচনা শুরু করে এবং সেখানে তিনি বলেন ইসলাম ধর্ম একটি নতুন ধর্ম, মুহাম্মদ একজন সাধারণ মানুষ, কুরআন সে নিজে লিখছে, গ্রীস চন্দ্র এর বাংলা অনুবাদ করছে।
এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উত্তেজিত হয় এবং তাদের অভিভাবকদের জানায়, পরে সে প্রায় ৬ মাস স্কুলে আসে নাই আত্মগোপনে থেকেছিল, এ নিয়ে চেয়াম্যান সমাধান করেন দেন। স্থানীয়ভাবে আশিষ আ’লীগের রাজনৈতীর সাথে জোড়তার ভাবে সম্পৃক্ত ছিল, এবং এ নিয়ে কোন বাড়াবাড়ি না করার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক মহলের আওয়ামী লীগ নেতা হান্নান মৃধা, যুবলীগ নেতা মিঠু গং চাপ প্রয়োগ করে।
গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতন পওয়ার পরেই এ নিয়ে মুখ খুলছেন অভিভাবক সদস্যরা এবং স্কুলের বিভিন্ন শিক্ষক ও কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীরা। বিষয়টি অস্বীকার করে শিক্ষক আশিষ বলেন, আমি ধর্ম নিয়ে কোন বাড়াবাড়ি করিনি, তবে এটা তো অনেক আগেই স্থানীয়ভাবে সমাধান হয়ে গেছে, এমনেই সরকার পতনের পরে আমি এখনও স্কুলে যেতে পারি নাই।
এদিকে বিদ্যালয়ের এসএমসি কমিটির অভিভাবক সদস্য শাহীন মৃধা ও ছাত্র অভিভাবক মো: নাসির মল্লিক সংশ্লিষ্ট মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর,উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে পৃথক বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন। এছাড়া ওই শিক্ষক ৬ মাস বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার পরেও তার বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ না নিয়ে এক দিনেই সকল হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে বিল ভাতা পেতে সহায়তা করেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক রমেন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, এ নিয়ে আমি কোন বক্তব্য দিব না। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২ সেপ্টেম্বর সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অরূপ রতন সিংহ তদন্তে স্কুলে যান এবং তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক ভাবে সত্যতা পাওয়া যায়। আমি অধিকতর তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করব তাদের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়া সহকারি শিক্ষক আষিশ মন্ডলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন তাকে সোকজ করার জন্য প্রধান শিক্ষককে নোটিশ দিতে বলেছি, নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে আপাতত তার বেতন স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতন হওয়ার পর থেকে তিনি অদ্যাবদি স্কুলে না গিয়ে আত্মগোপনে।
বাখ//আর