দ্বিতীয়বার লার্ভা পাওয়ায় দুটি নির্মাণাধীন ভবনের কাজ বন্ধ
- আপডেট সময় : ০৮:২৪:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ নভেম্বর ২০২২
- / ৪৫৬ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বার বার সাবধান করার পরেও দ্বিতীয়বার লার্ভা পাওয়ায় দুটি নির্মাণাধীন ভবনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।
শনিবার (৫ নভেম্বর) ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম রাজধানীর উত্তরায় ১১ নম্বর সেক্টরে ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পাশাপাশি ‘দশটায় দশ মিনিট প্রতি শনিবার নিজ নিজ বাসা বাড়ি করি পরিষ্কার’ শিরোনামে ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রমে অংশ নেন।
স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে ডিএনসিসি মেয়র কয়েকটি নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করেন। এসময় দুটি নির্মাণাধীন ভবনে অসংখ্য লার্ভা পাওয়া যায়।
মেয়রের উপস্থিতিতে অঞ্চল ৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুটি ভবনকে মোট ছয় লাখ টাকা জরিমানা করেন এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) থেকে ভবিষ্যতে এই ভবনে লার্ভা জন্মাতে দেওয়া হবে না প্রেক্ষিতে অঙ্গীকারনামা জমা না দেয়া পর্যন্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে বলেও জানান ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন।
এসময় ডিএনসিসি মেয়র বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে গেছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা মাসব্যাপী কর্মসূচি পরিচালনা করছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে ব্যাপক সচেতনতা কার্যক্রম চালাচ্ছি। বার বার সাবধান করা হলেও অনেকে সচেতন হচ্ছেন না। আগেও কয়েকবার এই নির্মাণাধীন ভবনে সাবধান করা হয়েছে। সাবধান করে দেওয়ার পরও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। তারপরও দেখছি বেসমেন্টে অসংখ্য লার্ভা। এভাবে চলতে দেয়া যায় না। আমরা দুটি ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। লার্ভা পেলে কোন ছাড় নয়। অভিযান চলমান থাকবে। কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। জনগণ সহযোগিতা না করলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না। জনগণের সহযোগিতায় মাত্র ১২ ঘণ্টায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে পেরেছি। অতএব জনগণ চাইলে ডেঙ্গুও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। ছাদ বাগানকে আমরা উৎসাহিত করছি। ছাদ বাগানের জন্য পুরস্কারও দিব। কিন্তু নিয়ম মেনে করতে হবে। ছাদ বাগানে পানি জমতে দেয়া যাবে না।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করনীয় সম্পর্কে শিশুদের শিক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, সবাইকে জানাতে হবে ড্রেন বা নর্দমার পানিতে কিন্তু এডিস মশার জন্ম হয় না। জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতেই এডিসের লার্ভা জন্মায়। নিজেদের বাসাবাড়িতে ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। জমে থাকা স্বচ্ছ পানি ফেলে দিন। শিশুদেরকেও এ বিষয়ে শিক্ষা দিতে হবে। বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সম্পৃক্ত হতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, সচেতনতা কার্যক্রম ও অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি আমরা ডেঙ্গুর চিকিৎসা প্রদান করছি। ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ডিএনসিসির ৪৬টি মাতৃসদন কেন্দ্রে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে একযোগে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কর্মসূচি পরিচালনা করা হচ্ছে। পুরো নভেম্বর মাস জুড়ে এই কর্মসূচি চলবে।
উত্তরায় ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রমে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান, ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ শরীফুর রহমান, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর জাকিয়া সুলতানা, অঞ্চল ৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।