রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
আ.লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হলেন লেনিন একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইলেন জয় বিএনপি পাকিস্তানের দালাল পার্টি: ওবায়দুল কাদের ঈশ্বরদীতে গণহত্যায় শহিদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন  ডামুড্যায় অবৈধ যান চলাচল রোধে মোবাইল কোর্ট  কলমাকান্দায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ বিতরণ  পরকীয়ার জেরে রূপপুর এনপিপি নিকিমথ কোম্পানির পরিচালকের গাড়ি চালক খুন : এক নারী আটক পানির অভাবে সেঁচ সঙ্কটে ধুকছে বাংলাদেশ সিশেলসকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ রমজানে পণ্যের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ নেই : তথ্যমন্ত্রী আওয়ামী লীগ নতুন পরিকল্পিত খেলায় নেমেছে : মির্জা ফখরুল ‘পরাশক্তিরা পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়ায় গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি’ প্রতিদিন মার্কিন ঘাঁটির উপর দিয়ে উড়ছে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ‘স্যার’ সম্বোধন ঔপনিবেশিক, এটা বদলাতে হবে–আ স ম রব   পাঁচ দশকেও গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পাওয়া হতাশাব্যাঞ্জক : রাবি উপাচার্য 

দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০৩১৬ : সংসদে শিক্ষামন্ত্রী

দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০৩১৬ : সংসদে শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বর্তমানে সারাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মোট ২০ হাজার ৩১৬টি বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। প্রত্যেকটি উপজেলায় একটি করে কলেজ ও একটি করে বিদ্যালয় সরকারিকরণ করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও তিনি জানান।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরনের এক প্রশ্নের লিথিত উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ কথা জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

উত্তরে ডা. দীপু মনি বলেন, বর্তমানে সারাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মোট ২০ হাজার ৩১৬টি। তার মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৬ষ্ঠ-৮ম) ২০৫৭টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৬ষ্ঠ-১০ম) ১৬ হাজার ৫১৬টি এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজ ১৪৪৩টি। বর্তমান সরকারের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে প্রত্যেকটি উপজেলায় একটি করে কলেজ ও একটি করে বিদ্যালয় সরকারিকরণ করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এর বাইরে নতুন কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করার লক্ষ্যে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে সারাদেশে ৩৫৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর লিখিত প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, টিউশন ফি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে এরইমধ্যে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি কাঠামো সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই কাঠামোগুলো পর্যালোচনার কাজ চলমান। শেষ হলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে একটি সমন্বিত নীতিমালা বা গাইডলাইন প্রণয়ন করা হবে।

তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এর ৯(৪) ধারা অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যূনতম শতকরা তিনভাগ আসন প্রত্যন্ত অনুন্নত অঞ্চলের মেধাবী অথচ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য সংরক্ষণ করা হবে। এসব শিক্ষার্থীকে টিউশন ফি ও অন্যান্য ফি ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। ওই বিধান অনুযায়ী, মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীরা স্বল্প বেতনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে পারবে।

সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতির অপর প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের সব জেলায় অন্তত একটি করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিটি বিভাগে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা রয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০ হাজার ৩১৬টি।

জাতীয় সংসদে মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মেহেরপুর বিল-২০২৩ এর সংশোধনীর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, নতুন করে স্থাপিত কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এখনও নিজস্ব জায়গা নেই। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা যেতে চান না বলেও জানান তিনি।

দেশে ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অতি সম্প্রতি স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনও পর্যন্ত নিজেদের কোনও স্থান নেই। কাজই শুরু হয়নি। তার বাইরেও কিছু আছে একেবারে নতুন তৈরি হয়েছে। সেখানে শুধুমাত্র উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ছাড়া অধ্যাপক পদমর্যাদার আর কেউ নেই।’

তিনি বলেন, পুরনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপক পদমর্যাদার কেউ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চান না। ওখানকার শিক্ষক হিসেবে প্রভাষক নিয়োগ হন, তাদের অধ্যাপক পদে যেতে লাগবে আরও ১৫ বছর। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার সুযোগ তৈরি হয়ে গেছে, তা কিন্তু নয়। সেই বাস্তবতাটা আমাদের মেনে নিতে হবে।

সব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা এক রকম নয় বলে স্বীকার করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ে মান এবং গবেষণায় আগ্রহ এক রকম নয়। বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান চর্চার নয়, জ্ঞান সৃষ্টির। সেই জ্ঞান সৃষ্টির উপায় হচ্ছে গবেষণা।

তিনি বলেন, আমরা যত্রতত্র অনার্স খুলেছি। সেটি জনপ্রতিনিধিদের আগ্রহেই হয়েছে। সেখানেই শিক্ষার্থীও অনার্স মানের নয়। শিক্ষকও হয়তো অনার্স মানের নয়, কিন্তু আমরা খুলেছি।

জনমত যাচাইয়ের আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। আমাদের উচ্চশিক্ষার ৭০ শতাংশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। সারা দেশব্যাপী দুই হাজার ২৫৭ টি কলেজে।

জনমত যাচাইয়ের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি করেন। তিনি বলেন, বছরে আমাদের আট থেকে ১০ লাখ লোক বিদেশে যায়। তাদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা কী দিয়েছে? কিছুই করেনি। তাদের ভাষাও শেখায়নি। পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন জ্ঞান দেওয়া হয়নি। আমাদের প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয় দরকার। যেখানে প্রবাসীদের ছেলে-মেয়েরা পড়বে। এবং প্রবাসে গিয়ে কী করবে তার দীক্ষা লাভ করবে।

দেশের কোন খাতে কত জনবল দরকার, তা নিয়ে কোনও গবেষণা হয়নি দাবি করে সংশোধনী আলোচনায় শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, আমাদের কোনও গ্লোবাল গবেষণা হয়নি। সারা পৃথিবীতে লরি চালক কত দরকার, নার্সিং দরকার কত জন, আমাদের দেশে দরকার কত জন? আমরা বানাচ্ছি রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির স্নাতক, কিন্তু প্রয়োজন হলো নার্স, চালক, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট। এই গবেষণা বাংলাদেশ কখনোই করে নাই। এটা না করার কারণে আমাদের স্নাতকরা বেকার হচ্ছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সঙ্গে ট্যালেন্ট পার্টনারশিপে আগ্রহী দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের উচিত ট্যালেন্ট পার্টনারশিপে যাওয়া। এটা না করে শুধু স্নাতক বানালে, তারা সারা পৃথিবীতে বেকার হয়ে ঘুরবে। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড ছিল, আছে, থাকবে। যে দেশে কোনও সম্পদ, তেল, গ্যাস নাই। সে দেশে জনগণই সম্পদ। তাদের শিক্ষিত ও দক্ষ করাই সম্পদ। সেখান থেকে আমরা ইট, পাথরকে বেশি ফোকাস দিচ্ছি। ব্রিজ, কালভার্টকে জাতির মেরুদণ্ড ভাবছি। শিক্ষা ও দক্ষতা জাতির মেরুদণ্ড হতে হবে।

পীর ফজলুর রহমান বলেন, একাদশ সংসদের মেয়াদ পায় শেষের দিকে। উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের সভাপতির পদ থেকে সংসদ সদস্যদের বাদ দিয়ে যে রায় দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে শিক্ষামন্ত্রী বারবার এ সংসদে বলেছিলেন। আপিল করবেন করবেন, শুনানি হবে হবে—এটা শুনতে শুনতে এই সংসদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *