ঢাকা ০৬:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দিনাজপুরে বিদ্যালয় গুলোর ভবনের ভগ্নদোষা : ভুগছে শিক্ষার্থী শিক্ষকরা

দিনাজপুর প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২:০০:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৪৯৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে উন্নয়নের উত্তরসূরী। ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন গলো। বিগত সরকারের আমলে স্কুল উন্নয়নের নামে চলেছে কেবল লুটপাট এর রাজত্ব। এই রাজত্বের হিংস্রোতায় দিনাজপুরের উচ্চ মাধ্যমিক ও দ্বিমুখী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ভবন গুলোর অবস্থা একেবারে জীর্ণ শীর্ণ। খসে পড়ছে ছাদ,নেই মেয়েদের শৌচাগার, টিফিন খাওয়ার ব্যবস্থা, ফ্যানগুলো অকার্যকর, নেই নামাজের জায়গা, শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত এসব প্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষাঙ্গন গুলো এমন অবস্থা দেখে বিচলিত দিনাজপুরের সচেতন মহল।

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার পাঁচ নং বিরল ইউনিয়নের করলা মাধববাটি দিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৬৮ সালের প্রতিষ্ঠিত হয়। অবহেলা আর অযত্নের অপর নাম এই দ্বিমুখী বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টির ভবন গুলো দেখলে মনে হবে ভুতুড়ে বাড়ি। এসব বাড়িতেই তৈরি হচ্ছে আগামীর প্রজন্ম।

দ্বিমুখী করলা মাধববাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সারোয়ার বলেন, স্কুলের ভবনগুলোর অবস্থা দেখে স্কুলে আসতে মন চায় না। প্রতিটি ক্লাসরুম ঘুনে ধরা। মাঝে মাঝে মাথার উপর ছাদ থেকে সিমেন্ট ঝরে পড়ে। নেই কোন ফ্যানের ব্যবস্থা। তীব্র গরমে আমরা ক্লাস করতে করতে হাঁপিয়ে যাই। বিকেলের দিকে ক্লাসে মনোযোগী হতে পারি না।

এছাড়া আমাদের ওয়াশরুম নেই। মেয়েদের জন্য আলাদা কোন শৌচাগার নেই। কমন রুম নেই। ক্লাসে বসেই দুপুরের খাবার খেতে হয়। এতে অনেক সময় অসাবধানতাবশত ক্লাসরুম অপরিষ্কার হয়ে থাকে। আমাদের দেখার মত কেউ নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, ভবনগুলোর জন্য যে বরাদ্দ আসছে তা পুরোটাই নেতাদের পকেটে গেছে। ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার আলো না ছড়িয়ে শিক্ষাঙ্গনের একটি কলঙ্কজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিরল পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব সবুজার সিদ্দিক সাগর। বিদ্যালয়ের জন্য অনেক কিছু করার ক্ষমতা থাকলেও তিনি আসলে কিছুই করেননি। শুধু নিজের পকেট ভরেছেন। এ কারণেই বিদ্যালয়গুলোর আজ এই করুন অবস্থা।

করলা মাধববাটি দিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর সহকারী প্রধান শিক্ষক খায়রুল ইসলাম বলেন, ভবনগুলো আজ থেকে অনেক দিন আগে নির্মিত। যার ফলে ভবনগুলো থেকে মাঝে মাঝে সিমেন্ট ঝরে পড়ছে। স্কুল ভবনের দেওয়াল গুলো স্যাতসেতে। ভালো কোন ওয়াশরুম নেই। ম্যানেজিং কমিটির সহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে এ বিষয়ে জানানো সত্বেও আমরা কোন প্রতিকার পাইনি।

বিরল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোসাম্মৎ রাবেয়া খাতুন বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমিক ও দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের আধুনিক ভবন তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছি। জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে। করলা মাধববাটি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর জন্য এখন পর্যন্ত কোন ভবন বরাদ্দ হয় নাই। বরাদ্দ হলেই জেলা জন স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।

দিনাজপুর জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর এস এম শাহিনুর ইসলাম বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই জেলায় আমরা অনেক মাদ্রাসা ও উচ্চ বিদ্যালয় আধুনিক ভবন নির্মাণ করেছি। করলা মাধববাটি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর জন্য এখন পর্যন্ত কোন ভবন বরাদ্দ হয় নাই। আশা করছি ধীরে ধীরে জেলার প্রত্যেকটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আধুনিক ভবন নির্মিত হবে।

উল্লেখ্য যে এই বিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষার্থী ৪১৩ জন, মোট শিক্ষক ১৩ জন, কর্মচারী ছয় জন।

বাখ//আর

নিউজটি শেয়ার করুন

দিনাজপুরে বিদ্যালয় গুলোর ভবনের ভগ্নদোষা : ভুগছে শিক্ষার্থী শিক্ষকরা

আপডেট সময় : ১২:০০:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে উন্নয়নের উত্তরসূরী। ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন গলো। বিগত সরকারের আমলে স্কুল উন্নয়নের নামে চলেছে কেবল লুটপাট এর রাজত্ব। এই রাজত্বের হিংস্রোতায় দিনাজপুরের উচ্চ মাধ্যমিক ও দ্বিমুখী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ভবন গুলোর অবস্থা একেবারে জীর্ণ শীর্ণ। খসে পড়ছে ছাদ,নেই মেয়েদের শৌচাগার, টিফিন খাওয়ার ব্যবস্থা, ফ্যানগুলো অকার্যকর, নেই নামাজের জায়গা, শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত এসব প্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষাঙ্গন গুলো এমন অবস্থা দেখে বিচলিত দিনাজপুরের সচেতন মহল।

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার পাঁচ নং বিরল ইউনিয়নের করলা মাধববাটি দিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৬৮ সালের প্রতিষ্ঠিত হয়। অবহেলা আর অযত্নের অপর নাম এই দ্বিমুখী বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টির ভবন গুলো দেখলে মনে হবে ভুতুড়ে বাড়ি। এসব বাড়িতেই তৈরি হচ্ছে আগামীর প্রজন্ম।

দ্বিমুখী করলা মাধববাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সারোয়ার বলেন, স্কুলের ভবনগুলোর অবস্থা দেখে স্কুলে আসতে মন চায় না। প্রতিটি ক্লাসরুম ঘুনে ধরা। মাঝে মাঝে মাথার উপর ছাদ থেকে সিমেন্ট ঝরে পড়ে। নেই কোন ফ্যানের ব্যবস্থা। তীব্র গরমে আমরা ক্লাস করতে করতে হাঁপিয়ে যাই। বিকেলের দিকে ক্লাসে মনোযোগী হতে পারি না।

এছাড়া আমাদের ওয়াশরুম নেই। মেয়েদের জন্য আলাদা কোন শৌচাগার নেই। কমন রুম নেই। ক্লাসে বসেই দুপুরের খাবার খেতে হয়। এতে অনেক সময় অসাবধানতাবশত ক্লাসরুম অপরিষ্কার হয়ে থাকে। আমাদের দেখার মত কেউ নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, ভবনগুলোর জন্য যে বরাদ্দ আসছে তা পুরোটাই নেতাদের পকেটে গেছে। ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার আলো না ছড়িয়ে শিক্ষাঙ্গনের একটি কলঙ্কজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিরল পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব সবুজার সিদ্দিক সাগর। বিদ্যালয়ের জন্য অনেক কিছু করার ক্ষমতা থাকলেও তিনি আসলে কিছুই করেননি। শুধু নিজের পকেট ভরেছেন। এ কারণেই বিদ্যালয়গুলোর আজ এই করুন অবস্থা।

করলা মাধববাটি দিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর সহকারী প্রধান শিক্ষক খায়রুল ইসলাম বলেন, ভবনগুলো আজ থেকে অনেক দিন আগে নির্মিত। যার ফলে ভবনগুলো থেকে মাঝে মাঝে সিমেন্ট ঝরে পড়ছে। স্কুল ভবনের দেওয়াল গুলো স্যাতসেতে। ভালো কোন ওয়াশরুম নেই। ম্যানেজিং কমিটির সহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে এ বিষয়ে জানানো সত্বেও আমরা কোন প্রতিকার পাইনি।

বিরল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোসাম্মৎ রাবেয়া খাতুন বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমিক ও দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের আধুনিক ভবন তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছি। জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে। করলা মাধববাটি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর জন্য এখন পর্যন্ত কোন ভবন বরাদ্দ হয় নাই। বরাদ্দ হলেই জেলা জন স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।

দিনাজপুর জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর এস এম শাহিনুর ইসলাম বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই জেলায় আমরা অনেক মাদ্রাসা ও উচ্চ বিদ্যালয় আধুনিক ভবন নির্মাণ করেছি। করলা মাধববাটি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর জন্য এখন পর্যন্ত কোন ভবন বরাদ্দ হয় নাই। আশা করছি ধীরে ধীরে জেলার প্রত্যেকটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আধুনিক ভবন নির্মিত হবে।

উল্লেখ্য যে এই বিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষার্থী ৪১৩ জন, মোট শিক্ষক ১৩ জন, কর্মচারী ছয় জন।

বাখ//আর