আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ৬ দিনের মাথায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৯ হাজারেরও বেশি। ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের জীবিত উদ্ধারে এখনও অভিযান চললেও সেই আশা অনেকটা ম্লান হয়ে যাচ্ছে।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই খবর জানিয়েছে।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে জানিয়েছেন, শুধু তুরস্কেই নিহত হয়েছে ২৪ হাজার ৬১৭ জন। দেশটির ১০টি প্রদেশের ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ভয়াবহ দুর্যোগে। তিনি আরও জানান, ৩২ হাজার ৭১টি টিম উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।
এর আগে, দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানায়, ভূমিকম্পে ৮০ হাজার ২৭৮ জন আহত হয়েছে।
এদিকে, সিরিয়ান অবজারভেটরি হিউম্যান রাইটস বলছে, সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৮৯ জনে। এখনও নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষ।
ভূমিকম্পের ফলে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে দেশ দুটিতে। ত্রাণের জন্য হাহাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সহায়তার হাত বাড়িয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করা এক গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জার্মান উদ্ধারকারীরা ও অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনী অনুসন্ধান অভিযান স্থগিত করেছে।
একজন উদ্ধারকারী বলেন, খাদ্য সরবরাহ কমে যাওয়ায় নিরাপত্তা আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেন, হাতায় প্রদেশে অজ্ঞাত গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে অস্ট্রিয়ান ফোর্সেস ডিজাস্টার রিলিফ ইউনিটের কয়েক ডজন কর্মী অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার বেস ক্যাম্পে আশ্রয় চেয়েছে।
এক বিবৃতিতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পিয়েরে কুগেলওয়েস বলেছেন, তুরস্কে দলগুলোর মধ্যে আগ্রাসন বাড়ছে। একটি জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনা নিরাপত্তা ঝুঁকির সঙ্গে কোনো যুক্তিসঙ্গত সম্পর্ক বহন করে না।
সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ গ্রুপ আইএসএআর ও জার্মানির ফেডারেল এজেন্সি ফর টেকনিক্যাল রিলিফের (টিএসডব্লিউ) জার্মান শাখাও নিরাপত্তা উদ্বেগ উল্লেখ করে অপারেশন স্থগিত করেছে।
অন্যদিকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, লুটপাটের অভিযোগে প্রায় ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি বন্দুকও জব্দ করা হয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, এ পরিস্থিতিতে কেউ আইন ভঙ্গ করলে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করবেন তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধ্বংসস্তূপে আটকেপড়া মানুষেরা অনেক সময় এক সপ্তাহ বা বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারেন। কিন্তু জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা দ্রুত কমছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবনের স্পন্দন পেতে থার্মাল ক্যামেরা ব্যবহার শুরু করেছেন। যা কেউ জীবিত থাকলে তাদের দুর্বল অবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সূত্র : বিবিসি, ব্লুমবার্গ।