ঢাকা ০৯:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওজন স্কেলের কারণেই বাড়ছে পরিবহণ খরচ!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:১৯:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪৫৮ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওজন স্কেল ব্যবহারের কারণে পরিবহন খরচ বেড়েছে। ছবিটি ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ড এলাকা থেকে নেওয়া।

বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশেষ প্রতিবেদক :

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওজন স্কেল ব্যবহারের কারণে পরিবহন খরচ বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ এক বাহনে এক কন্টেইনার মালামাল নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে পণ্যর দাম বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে সওজ বলছে, সড়ক ঠিক রাখতে স্কেলের বিকল্প নেই। তাছাড়া একটি বাহন ১৩ টনের বেশি পণ্য বোঝাই করাটাও নিরাপদ নয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বসানো ওজন স্কেলের কারণে একটি পরিবহন ১৩ টনের বেশি পণ্য বহন করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এতে বেড়ে যাচ্ছে পণ্য আনা-নেওয়ার খরচ। ব্যবসায়ীরা বলছেন-আগে বন্দর থেকে এক কনটেইনার পণ্য সরবরাহের জন্য যেখানে দরকার হতো একটি গাড়ি সেখানে বর্তমানে লাগছে দুটি গাড়ি। যার ফলে ব্যবসায়ীদের নিয়মিত লোকসান হচ্ছে। এদিকে সম্প্রতি চট্রগ্রাম ব্যবসায়ী সংগঠনের একটি অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী ওজন স্কেল বিষয়ে বলেন, সারাদেশে এক নিয়ম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আরেক নিয়ম গ্রহণযোগ্য নয়। সারাদেশের কোথাও লোড এক্সেল নেই, কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে লোড এক্সেল বসানো হয়েছে। এটা ঠিক নয়। পণ্য পরিবহনে যদি এভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তাহলে পণ্যের ব্যয়ে প্রভাব ফেলবে বলেও মন্তব্য করেন।
ব্যবসায়ী নেতাদের অভিযোগ-স্কেলের কারণে আমদানি-রপ্তানি খাতের ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহনে চট্টগ্রাম বন্দরের স্থলে অন্য বন্দর ব্যবহারকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। সারাদেশে মহাসড়ক রয়েছে ৩৬টি। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জন্যই কেন ১৩ টন ওজন স্কেল প্রশ্ন ব্যবসায়ীদের। তবে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যায়ক্রমে অন্যান্য মহাসড়কও স্কেলের আওতায় আসবে উল্লেখ করে তারা বলছেন, পণ্যবাহী গাড়িতে ওভারলোডিংয়ের কারণে মহাসড়ক বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে অতিরিক্ত পণ্যবাহী যান চলাচল ঠেকাতে ২০১২ সালে এক্সেল লোড নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। এই নীতিমালা না মানলে প্রতিটি পণ্যবাহী যানবাহন দুই থেকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ড ও দাউদকান্দি এলাকার দুই জায়গায় বসানো হয় ওজন মাপার স্কেল (এক্সেল লোড কন্ট্রোল) স্থাপন করে দিয়ে চাকাভেদে প্রতিটি শ্রেণির গাড়ির জরিমানার হারও নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনের জন্য চারটি ধাপ পর্যন্ত এই জরিমানা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. আমিনুল হক বলেন, কোন গাড়ির ওজনসীমা কত হবে, তা নির্ধারণ করে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ছয় চাকার চার এক্সেল গাড়িতে সাড়ে ১৫ টন বা ১৬ টন পণ্য বহনের সক্ষমতা রয়েছে বøু-বুক অনুযায়ী। তা আরও বাড়ালে নিশ্চিতভাবেই সড়কের ক্ষতি হবে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান বলেন, বর্তমানে এক্সেল লোড-সংক্রান্ত নীতিমালা কার্যকর রয়েছে। শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওজন স্কেল বসানো হচ্ছে তা ঠিক নয়। দেশের অপরাপর মহাসড়কেও ওজন স্কেল বসছে। মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আরো প্রায় ২৮টি মহাসড়কে নতুন করে ওজনসীমা নিয়ন্ত্রণ স্কেল বসানোর কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এগুলো বসানো হলে সুফল মিলবে।
তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, মহাসড়ক রক্ষার নামে ওজন স্কেল বসানো হয়েছে শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। এ স্কেলের কারণে চট্টগ্রাম হয়ে আসা পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে অনেকাংশ। অথচ দেশের মোংলা বন্দর, বেনাপোল স্থলবন্দরসহ অনেক বন্দর রয়েছে। প্রতিটি বন্দর দিয়েই পণ্য আমদানি হয়। কিন্তু ওজন স্কেলের খড়কে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চট্টগ্রামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। একই কারণে পরিবহন ব্যয় বেড়েছে সরকারি সংস্থাগুলোর। ১৩ টনের বেশি পণ্য পরিবহন করতে না পারায় ব্যয় বেড়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোরও।
দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন বলেন, ওজন স্কেলের নামে গলার কাঁটা দেশের আর কোনো মহাসড়কে নেই। শুধুু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ ধরনের ওজন স্কেল স্থাপন করা হয়েছে। দেশের কোথাও এ ধরনের ওজন স্কেল নেই। স্কেলের কারণে পণ্য পরিবহন ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ। ঢাকার আমদানিকারক যারা চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করে তা ঢাকায় নিয়ে যান তারাও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই এক্সেল লোড কন্ট্রোল অপসারণের দাবি করছি।
খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের পাইকারি মার্কেট হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ওজন স্কেল অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছি। এখন আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহণ ভাড়া আগের চেয়ে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু দেশের অন্য কোথাও ওজন স্কেল না থাকায় সেখানকার ব্যবসায়ীদের বাড়তি পরিবহণ ব্যয় গুনতে হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরাই ওজন স্কেলে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
কুমিল্লা চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি মাসুদ খান ইমরান বলেন, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি ও সীতাকুন্ড ওজন স্কেলের বিষয়ে আমরা সরকারকে নানাভাবে বহুবার বলেছি। দেশের সব মহাসড়কে না বসিয়ে চট্টগ্রামের একটা অংশে স্কেল বসিয়ে পণ্যবাহী পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সোমবার (১০ অক্টোবর) চট্টগ্রামের স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও রপ্তানি মেলার উদ্বোধনকালে ওজন স্কেলের প্রসঙ্গটি আসতেই সভার প্রধান অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সারাদেশে এক নিয়ম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আরেক নিয়ম গ্রহণযোগ্য নয়। সারাদেশের কোথাও লোড এক্সেল নেই, কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে লোড এক্সেল বসানো হয়েছে। এটা ঠিক নয়। পণ্য পরিবহনে যদি এভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তাহলে পণ্যের ব্যয়ে প্রভাব ফেলবে। জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। যা সাধারণ মানুষের জন্যে হবে কষ্টকর। আমি আবারো সড়ক মন্ত্রীকে কথাটা বলবো, এই সিস্টেমটা পরিবর্তন করতে। সারাদেশে যেভাবে আছে, সেভাবেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে করা হউক।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওজন স্কেলের কারণেই বাড়ছে পরিবহণ খরচ!

আপডেট সময় : ১২:১৯:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২

বিশেষ প্রতিবেদক :

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওজন স্কেল ব্যবহারের কারণে পরিবহন খরচ বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ এক বাহনে এক কন্টেইনার মালামাল নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে পণ্যর দাম বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে সওজ বলছে, সড়ক ঠিক রাখতে স্কেলের বিকল্প নেই। তাছাড়া একটি বাহন ১৩ টনের বেশি পণ্য বোঝাই করাটাও নিরাপদ নয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বসানো ওজন স্কেলের কারণে একটি পরিবহন ১৩ টনের বেশি পণ্য বহন করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এতে বেড়ে যাচ্ছে পণ্য আনা-নেওয়ার খরচ। ব্যবসায়ীরা বলছেন-আগে বন্দর থেকে এক কনটেইনার পণ্য সরবরাহের জন্য যেখানে দরকার হতো একটি গাড়ি সেখানে বর্তমানে লাগছে দুটি গাড়ি। যার ফলে ব্যবসায়ীদের নিয়মিত লোকসান হচ্ছে। এদিকে সম্প্রতি চট্রগ্রাম ব্যবসায়ী সংগঠনের একটি অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী ওজন স্কেল বিষয়ে বলেন, সারাদেশে এক নিয়ম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আরেক নিয়ম গ্রহণযোগ্য নয়। সারাদেশের কোথাও লোড এক্সেল নেই, কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে লোড এক্সেল বসানো হয়েছে। এটা ঠিক নয়। পণ্য পরিবহনে যদি এভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তাহলে পণ্যের ব্যয়ে প্রভাব ফেলবে বলেও মন্তব্য করেন।
ব্যবসায়ী নেতাদের অভিযোগ-স্কেলের কারণে আমদানি-রপ্তানি খাতের ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহনে চট্টগ্রাম বন্দরের স্থলে অন্য বন্দর ব্যবহারকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। সারাদেশে মহাসড়ক রয়েছে ৩৬টি। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জন্যই কেন ১৩ টন ওজন স্কেল প্রশ্ন ব্যবসায়ীদের। তবে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যায়ক্রমে অন্যান্য মহাসড়কও স্কেলের আওতায় আসবে উল্লেখ করে তারা বলছেন, পণ্যবাহী গাড়িতে ওভারলোডিংয়ের কারণে মহাসড়ক বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে অতিরিক্ত পণ্যবাহী যান চলাচল ঠেকাতে ২০১২ সালে এক্সেল লোড নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। এই নীতিমালা না মানলে প্রতিটি পণ্যবাহী যানবাহন দুই থেকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ড ও দাউদকান্দি এলাকার দুই জায়গায় বসানো হয় ওজন মাপার স্কেল (এক্সেল লোড কন্ট্রোল) স্থাপন করে দিয়ে চাকাভেদে প্রতিটি শ্রেণির গাড়ির জরিমানার হারও নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনের জন্য চারটি ধাপ পর্যন্ত এই জরিমানা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. আমিনুল হক বলেন, কোন গাড়ির ওজনসীমা কত হবে, তা নির্ধারণ করে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ছয় চাকার চার এক্সেল গাড়িতে সাড়ে ১৫ টন বা ১৬ টন পণ্য বহনের সক্ষমতা রয়েছে বøু-বুক অনুযায়ী। তা আরও বাড়ালে নিশ্চিতভাবেই সড়কের ক্ষতি হবে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান বলেন, বর্তমানে এক্সেল লোড-সংক্রান্ত নীতিমালা কার্যকর রয়েছে। শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওজন স্কেল বসানো হচ্ছে তা ঠিক নয়। দেশের অপরাপর মহাসড়কেও ওজন স্কেল বসছে। মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আরো প্রায় ২৮টি মহাসড়কে নতুন করে ওজনসীমা নিয়ন্ত্রণ স্কেল বসানোর কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এগুলো বসানো হলে সুফল মিলবে।
তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, মহাসড়ক রক্ষার নামে ওজন স্কেল বসানো হয়েছে শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। এ স্কেলের কারণে চট্টগ্রাম হয়ে আসা পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে অনেকাংশ। অথচ দেশের মোংলা বন্দর, বেনাপোল স্থলবন্দরসহ অনেক বন্দর রয়েছে। প্রতিটি বন্দর দিয়েই পণ্য আমদানি হয়। কিন্তু ওজন স্কেলের খড়কে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চট্টগ্রামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। একই কারণে পরিবহন ব্যয় বেড়েছে সরকারি সংস্থাগুলোর। ১৩ টনের বেশি পণ্য পরিবহন করতে না পারায় ব্যয় বেড়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোরও।
দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন বলেন, ওজন স্কেলের নামে গলার কাঁটা দেশের আর কোনো মহাসড়কে নেই। শুধুু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ ধরনের ওজন স্কেল স্থাপন করা হয়েছে। দেশের কোথাও এ ধরনের ওজন স্কেল নেই। স্কেলের কারণে পণ্য পরিবহন ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ। ঢাকার আমদানিকারক যারা চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করে তা ঢাকায় নিয়ে যান তারাও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই এক্সেল লোড কন্ট্রোল অপসারণের দাবি করছি।
খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের পাইকারি মার্কেট হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ওজন স্কেল অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছি। এখন আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহণ ভাড়া আগের চেয়ে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু দেশের অন্য কোথাও ওজন স্কেল না থাকায় সেখানকার ব্যবসায়ীদের বাড়তি পরিবহণ ব্যয় গুনতে হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরাই ওজন স্কেলে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
কুমিল্লা চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি মাসুদ খান ইমরান বলেন, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি ও সীতাকুন্ড ওজন স্কেলের বিষয়ে আমরা সরকারকে নানাভাবে বহুবার বলেছি। দেশের সব মহাসড়কে না বসিয়ে চট্টগ্রামের একটা অংশে স্কেল বসিয়ে পণ্যবাহী পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সোমবার (১০ অক্টোবর) চট্টগ্রামের স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও রপ্তানি মেলার উদ্বোধনকালে ওজন স্কেলের প্রসঙ্গটি আসতেই সভার প্রধান অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সারাদেশে এক নিয়ম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আরেক নিয়ম গ্রহণযোগ্য নয়। সারাদেশের কোথাও লোড এক্সেল নেই, কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে লোড এক্সেল বসানো হয়েছে। এটা ঠিক নয়। পণ্য পরিবহনে যদি এভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তাহলে পণ্যের ব্যয়ে প্রভাব ফেলবে। জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। যা সাধারণ মানুষের জন্যে হবে কষ্টকর। আমি আবারো সড়ক মন্ত্রীকে কথাটা বলবো, এই সিস্টেমটা পরিবর্তন করতে। সারাদেশে যেভাবে আছে, সেভাবেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে করা হউক।