টুঙ্গিপাড়ায় নতুন ধারায় ডালি পদ্ধতিতে সবজি চাষ
- আপডেট সময় : ১২:৩৬:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৪৫৬ বার পড়া হয়েছে

// গোপালগঞ্জ সংবাদদাতা //
চার দিক পানি থৈথৈ করছে। এখানে কোন ফসল ফলত না।সারা বছর জলাবদ্ধ, আনাবাদি ও পতিত পড়ে থাকত এ বিল। জলাবদ্ধ জমিতে এ বছর নতুন উদ্ভাবিত ডালি পদ্ধতিতে সবজি চাষ করা হয়েছে।
ডালি পদ্ধতির মাচায় ঝুলে আছে লাউ, কুমড়া, শসা, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গাসহ নানা জাতের সবজি।
জলাবদ্ধ জমিতে বাঁশ বসানো হয়। পানির ওপর ওই বাঁশে নেট ও বস্তা দিয়ে ডালি তৈরী করা হয়। ডালিতে মাটি, জৈব সার ও অন্যন্য উপাদান দেওয়া হয়। তারপর ডালিতে রোপণ করা হয় সবজির চারা। পরে সবজির চারা মাচায় বাইয়ে দেওয়া হয়। আর এ মাচায় লতা জাতীয় সবজি উৎপাদিত হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভাসমান বেডে সবজি ও সমলয় চাষ সম্প্রসারণ এবং জনপ্রিয় করণ প্রকল্পের আওতায় এভাবে সবজি চাষ হচ্ছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনয়নের জলাবদ্ধ পুবের বিলে। এ বিলে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার পৈত্রিক জমি ও অন্যন্য কৃষকরেও জমি রয়েছে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পূবের বিলের অধিকাংশ জমি জলাবদ্ধ, পতিত ও অনাবাদি থাকত। বছরের অধিকাংশ সময় পানির নিচে তলিয়ে থাকা জমি আর শুকনো মৌসুমে হাঁটু বা কোমর পানি থাকায় সেখানে কোনো ফসল উৎপাদন হতো না। বিগত ৫০ বছর ধরে চাষাবাদ না হওয়ায় জমিগুলো পতিত বা অনাবাদি ছিল । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি পুবের বিলের পৈতৃক জমি পরিদর্শ করেন। তিনি এ বিলসহ সারাদেশের জলাবদ্ধ পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনার নির্দেশ দেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচানী এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার উন্নয়ন প্রতিনিধি সাবেক সিনিয়র সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার ও কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় টুঙ্গিপাড়ার পুবের বিলে চাষাবাদ শুরু করেন । গত মৌসুমে এ বিলে বোরো ধান উৎপাদিত হয়েছিন। এখন এ বিলে পেন কালচার পদ্ধতিতে মৎস্য চাষ, হাঁস পালন করা হচ্ছে। সেই সাথে জলাবদ্ধ জমিতে ভাসমান বেড, ডালি পদ্ধতি ও রাস্তার খাদে গোড়া পদ্ধতিতে সবজি, ফল, শাক ও মশলা জাতীয় ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, পতিত ও জলাবদ্ধ পুবের বিলে চাষাবাদ শুরু করার পর এলাকার মানুষ এ চাষাবাদ নিয়ে হাসাহাসি করত। এখানে আমরা ধানসহ নানা জাতের সবজি, ফল, সমলা, শাক ফলিয়ে সফল হয়েছি। আগামীতে এ বিলের কৃষকরা সারা বছর ব্যাপক আকারে চাষাবাদ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপপরিচালক মো. আঃ কাদের সরদার বলেন, ডালি পদ্ধতিটা গোপালগঞ্জে মডেল হিসেবে এ বছর প্রদর্শনী করা হয়েছে। এতে আমরা কাক্সিক্ষত সাফল্য পেয়েছি। এটা দেখে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। আগামীতে পতিত ও জলাবদ্ধ জমিতে কৃষকেরা নিজ উদ্যোগে ডালি পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদনে আগ্রহ দেখাচ্ছেন ।তাই সামনের বর্ষা মৌসুমে জেলার সব উপজেলায়ও এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
বা/খ/রা