ঢাকা ১১:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

চিলমারীতে ভিডব্লিউবি চাল বিতরনে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৫২:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৪৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ভানারোবেন ওমেন বেনিফিট মহিলা উন্নয়ন (ভিডব্লিউবি) এর চাল বিতরণে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে পরিষদের ভিতরেই কেনা বেচা হচ্ছে সুবিধাভুগীদের দেয়া চাল।  ঘটনাটি ঘটেছে রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদে।  এদিকে সুবিধাভুগীরা বলছেন, চালের সাথে দেয়া বস্তার মুল্য হিসেবে নেয়া হচ্ছে এই টাকা।  ইউপি চেয়ারম্যানের দাবী, চালের বস্তার জন্য নেয়া হয়েছে এই টাকা। অপরদিকে চাল কেনা বেচার বিষয়টি তিনি কোনো ভাবেই প্রতিকার করতে পারচ্ছেন না ।
মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে ১২ঃ ৩০ মিনিট পর্যন্ত উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিনে গিয়ে অবস্থান করলে ধরা পড়ে এমন চিত্র। সুবিধাভুগীরা চাল নিয়েই সাথে সাথে বিক্রি করছেন। অপর দিকে এই চাল কার্ডের বিপরীতে নিতে দিতে হচ্ছে মাথা পিছু ২০ থেকে ৩০ টাকা। এতে দেখা যায় গড়ে প্রায় ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন হবে ওই ইউনিয়ন পরিষদেই।
চাল বিতরণের সময় শ্রমিক মাইদুল ইসলাম কে কিসের টাকা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন চেয়ারম্যান টাকা নিতে বলেছে। আপনারা চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন।
সুবিধা ভুগী রাহেনা বেগম বলেন, ৩০ কেজি করে চাল পেয়েছি এবং ভালো চালই দিয়েছে। কিন্তু তারা আমার থেকে ৩০টাকা নিয়েছে চালের বস্তার জন্যে।
অপরদিকে আরেক সুবিধাভুগী খালেদা, ইয়েরন জানান, কেনো টাকা নিছে জানি না। সবার থেকেই এই টাকা নিচ্ছে এবং আমাকে দিতে বলছে আমিও দিয়েছি।
এই প্রতিবেদকে দেখে এক সুবিধাভুগী চালের ব্যবসায়ী ভেবে ১১শ’ টাকা চাল দরদাম করে। অপরদিকে পরিষদে চাল বিতরণের স্থানের ঠিক সামনেই কয়েকজন ব্যবসায়ীকে চাল কিনতে দেখা গেছে। তারা ৩০কেজি চালের বস্তা ১০৫০/১১৫০টাকা দিয়ে ক্রয় করে নিচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুবিধাভোগী এক মহিলা বলেন, তিনি ৩০ কেজি চালের বস্তা ১১০০টাকায় বিক্রি করেছেন। শুধু ওই মহিলাই নয় এমন আরো অনেকেই এভাবেই চাল উন্মুক্তভাবে দরদাম করে চাল বিক্রি করছে।  চাল ক্রেতাদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা কোন মন্তব্যই করেনি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ভানারোবেন ওমেন বেনিফিট মহিলা উন্নয়ন (ভিডব্লিউবি) আওতায় ৩ হাজার ২২৩ টি সুবিধাভোগীদের মাঝে এই কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে ৫শ’ ৬৮ টি, নয়ারহাটে ৩শ’ ৬০টি, থানাহাট ৭শ’ ৬০টি, চিলমারী ইউনিয়নে ৩শ’ ২৫টি, অষ্টমীরচর ৫শ’ ১৫টি এবং রমনা মডেল ইউনিয়নে ৬শ’ ৯৫টি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।
এর আগে সকালে উপজেলার থানাহাট ও রমনা মডেল ইউনিয়নে ১ হাজার ৪৫৫ জনের মাঝে চাল বিতরণের উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রুকুনুজ্জামান শাহীন। এদিকে শুরুর দিনে এমন অনিয়মের অভিযোগ উঠায় ভানারোবেন ওমেন বেনিফিট মহিলা উন্নয়ন (ভিডব্লিউবি) প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ওই ইউনিয়নের দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার ও কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে বাইরে এসেছি এর মধ্যেই ইউপি চেয়ারম্যান আমার সাথে কথা না বলে মালামাল বিতরণ শুরু করেছেন। আমি টাকা নেয়ার বিষয়টি শুনেছি এবং চাল বিতরণ বন্ধ রাখতে ইউপি চেয়ারম্যান কে বলেছি।
টাকা নেয়া কথা স্বীকার করে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আকা বলেন, বস্তার মূল্য হিসেবে এই টাকা নেয়া হচ্ছে। চাল বিক্রির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি চাল যাতে কেই বিক্রি না করে। আজ যেহেতু প্রথম দিন । তবে এরপর থেকে পুলিশের সহযোগীতা নিয়ে চাল বিতরণ করা হবে, যাতে কোনো ব্যবসায়ী পরিষদের ভিতরথেকে এই ধরণের কার্যক্রম না করতে পারে।
এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোছা. সোহেলী পারভীন বলেন, বস্তার টাকা নেয়া কোনো নিয়ম নেই। আপনাদের মুখে শোনার পর আমি লোক পাঠিয়েছি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্তা নেয়া হবে।
বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

চিলমারীতে ভিডব্লিউবি চাল বিতরনে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ

আপডেট সময় : ০২:৫২:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ভানারোবেন ওমেন বেনিফিট মহিলা উন্নয়ন (ভিডব্লিউবি) এর চাল বিতরণে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে পরিষদের ভিতরেই কেনা বেচা হচ্ছে সুবিধাভুগীদের দেয়া চাল।  ঘটনাটি ঘটেছে রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদে।  এদিকে সুবিধাভুগীরা বলছেন, চালের সাথে দেয়া বস্তার মুল্য হিসেবে নেয়া হচ্ছে এই টাকা।  ইউপি চেয়ারম্যানের দাবী, চালের বস্তার জন্য নেয়া হয়েছে এই টাকা। অপরদিকে চাল কেনা বেচার বিষয়টি তিনি কোনো ভাবেই প্রতিকার করতে পারচ্ছেন না ।
মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে ১২ঃ ৩০ মিনিট পর্যন্ত উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিনে গিয়ে অবস্থান করলে ধরা পড়ে এমন চিত্র। সুবিধাভুগীরা চাল নিয়েই সাথে সাথে বিক্রি করছেন। অপর দিকে এই চাল কার্ডের বিপরীতে নিতে দিতে হচ্ছে মাথা পিছু ২০ থেকে ৩০ টাকা। এতে দেখা যায় গড়ে প্রায় ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন হবে ওই ইউনিয়ন পরিষদেই।
চাল বিতরণের সময় শ্রমিক মাইদুল ইসলাম কে কিসের টাকা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন চেয়ারম্যান টাকা নিতে বলেছে। আপনারা চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন।
সুবিধা ভুগী রাহেনা বেগম বলেন, ৩০ কেজি করে চাল পেয়েছি এবং ভালো চালই দিয়েছে। কিন্তু তারা আমার থেকে ৩০টাকা নিয়েছে চালের বস্তার জন্যে।
অপরদিকে আরেক সুবিধাভুগী খালেদা, ইয়েরন জানান, কেনো টাকা নিছে জানি না। সবার থেকেই এই টাকা নিচ্ছে এবং আমাকে দিতে বলছে আমিও দিয়েছি।
এই প্রতিবেদকে দেখে এক সুবিধাভুগী চালের ব্যবসায়ী ভেবে ১১শ’ টাকা চাল দরদাম করে। অপরদিকে পরিষদে চাল বিতরণের স্থানের ঠিক সামনেই কয়েকজন ব্যবসায়ীকে চাল কিনতে দেখা গেছে। তারা ৩০কেজি চালের বস্তা ১০৫০/১১৫০টাকা দিয়ে ক্রয় করে নিচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুবিধাভোগী এক মহিলা বলেন, তিনি ৩০ কেজি চালের বস্তা ১১০০টাকায় বিক্রি করেছেন। শুধু ওই মহিলাই নয় এমন আরো অনেকেই এভাবেই চাল উন্মুক্তভাবে দরদাম করে চাল বিক্রি করছে।  চাল ক্রেতাদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা কোন মন্তব্যই করেনি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ভানারোবেন ওমেন বেনিফিট মহিলা উন্নয়ন (ভিডব্লিউবি) আওতায় ৩ হাজার ২২৩ টি সুবিধাভোগীদের মাঝে এই কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে ৫শ’ ৬৮ টি, নয়ারহাটে ৩শ’ ৬০টি, থানাহাট ৭শ’ ৬০টি, চিলমারী ইউনিয়নে ৩শ’ ২৫টি, অষ্টমীরচর ৫শ’ ১৫টি এবং রমনা মডেল ইউনিয়নে ৬শ’ ৯৫টি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।
এর আগে সকালে উপজেলার থানাহাট ও রমনা মডেল ইউনিয়নে ১ হাজার ৪৫৫ জনের মাঝে চাল বিতরণের উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রুকুনুজ্জামান শাহীন। এদিকে শুরুর দিনে এমন অনিয়মের অভিযোগ উঠায় ভানারোবেন ওমেন বেনিফিট মহিলা উন্নয়ন (ভিডব্লিউবি) প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ওই ইউনিয়নের দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার ও কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে বাইরে এসেছি এর মধ্যেই ইউপি চেয়ারম্যান আমার সাথে কথা না বলে মালামাল বিতরণ শুরু করেছেন। আমি টাকা নেয়ার বিষয়টি শুনেছি এবং চাল বিতরণ বন্ধ রাখতে ইউপি চেয়ারম্যান কে বলেছি।
টাকা নেয়া কথা স্বীকার করে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আকা বলেন, বস্তার মূল্য হিসেবে এই টাকা নেয়া হচ্ছে। চাল বিক্রির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি চাল যাতে কেই বিক্রি না করে। আজ যেহেতু প্রথম দিন । তবে এরপর থেকে পুলিশের সহযোগীতা নিয়ে চাল বিতরণ করা হবে, যাতে কোনো ব্যবসায়ী পরিষদের ভিতরথেকে এই ধরণের কার্যক্রম না করতে পারে।
এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোছা. সোহেলী পারভীন বলেন, বস্তার টাকা নেয়া কোনো নিয়ম নেই। আপনাদের মুখে শোনার পর আমি লোক পাঠিয়েছি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্তা নেয়া হবে।
বা/খ: এসআর।