ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ যেসব জেলায় আঘাত হানতে পারে
- আপডেট সময় : ০৭:৩৭:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২২
- / ৪০৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বঙ্গোপাসাগরে তৈরি গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে যেসব জেলায় আঘাত হানতে পারে তা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুল হক। দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে। এটি লঘুচাপ আকাওে গত বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় আন্দামান সাগর এবং দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছিল। সেটি ধীরে ধীওে গতকাল শনিবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় সুস্পস্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। একই দিনে নিম্নচাপে এবং আজ রোববার (২৩ অক্টোবর) গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
আজ রোববার (২৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলার মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
গভীর নিম্নচাপটির বর্ধিতাংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপের পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুবাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় নিয়ে বেশ উদ্বেগে বাংলাদেশ। কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৭৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়েই এটি আঘাত আনতে পারে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে সরকার। লঘুচাপ সৃষ্টির পর থেকেই আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পূর্বাভাস সেন্টারগুলোর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোকে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে মানবিক সহায়তা দিতে আমরা প্রত্যেক জেলায় ২৫ টন চাল, ৫ লাখ টাকা এবং ড্রাইকেক ও বিস্কুট সরবরাহ করেছি। যেকোনো সংখ্যক লোককে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা যাবে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এটি যেহেতু সুপার সাইক্লোন হবে না, সিভিয়ার সাইক্লোন হবে— এটার গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি ৮৭ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ এবং ১৭ ডিগ্রি অক্ষাংশ সংযোগস্থলে পৌঁছার পরে এটি উত্তর-পূর্ব দিকে টার্ন নিতে পারে। যদি উত্তর-পূর্ব দিকে টার্ন করে তাহলে এটি কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৭৩০ কিলোমিটারজুড়ে উপকূলের ১৯টি জেলাতেই আঘাত হানবে। ঘূর্ণিঝড়টি কাল ২৪ অক্টোবর (সোমবার) দিবাগত রাত থেকে ২৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে গভীর নিম্নচাপটি কাল রোববার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঘড়ে রূপান্তরিত হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তখন এর নাম হবে ‘সিত্রাং’।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতির বিষয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, লঘুচাপ সৃষ্টির পর থেকেই আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পূর্বাভাস সেন্টারগুলোর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোকে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সব জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আমাদের ভার্চুয়ালি মিটিং হয়েছে। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং হয়েছে। সিপিপিকে (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) প্রস্তুতি গ্রহণ ও সতর্কবার্তা প্রচারের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আতিকুল হক, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম রওশন আরা, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) পরিচালক আহমেদুল হক এবং আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় অমাবস্যা থাকার কারণে তিন থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।