গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে শেভরনের আগ্রহ প্রকাশ
- আপডেট সময় : ১১:০২:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩
- / ৫০৩ বার পড়া হয়েছে

আমেরিকা দ্বিতীয় বৃহৎ কোম্পানি শেভরন করপোরেশন বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে এবার আগ্রহ প্রকাশ করেছে । এর আগে জ্বালানি খাতে আমেরিকার সবচেয়ে বড় কোম্পানি এক্সন মোবিল গভীর সমুদ্র নিয়ে পরপর দুটি প্রস্তাব দিয়েছে। সেই প্রস্তাব নিয়ে মার্কিন এ প্রতিষ্ঠান এখনো তদবির করছে। এ ছাড়া অনেক কোম্পানি আমাদের সমুদ্রে কাজ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। ’
বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রের মিয়ানমার সীমান্ত এলাকাসহ বিভন্ন এলাকায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য অনুমোদন চেয়ে প্রস্তাব দিয়েছে শেভরন। বিষয়টি জানিয়ে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এক্সন মোবিলের পর মার্কিন আরেক কোম্পানি গভীর সমুদ্রে কাজ করতে আগ্রহী। এ জন্য লিখিত প্রস্তাব পেয়েছি। গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে অনেক কোম্পানি আগ্রহী জানালেও আর কোনো কোম্পানির বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু জানাননি প্রতিমন্ত্রী।
এদিকে এক প্রশ্নের জবাবে শেভরন বাংলাদেশের মুখপাত্র শেখ জাহিদুর রহমান এ প্রস্তাবের ব্যাপারে কোনো কিছু নিশ্চিত করেননি। তিনি বলেছেন, ‘শেভরন বাংলাদেশ অনেক বছর ধরে বাংলাদেশে কাজ করছে যাতে বাংলাদেশের গ্যাসের চাহিদা যথাসম্ভব মেটানো যায়। বাংলাদেশে গ্যাস আবিষ্কারে আরও বিনিয়োগ করতে শেভরন কাজ করে যাচ্ছে। ’
জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, শেভরন ও এক্সন মোবিলের প্রস্তাব নিয়ে আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নাও নিতে পারে সরকার। কারণ, সামনে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। সুতরাং এ মুহূর্তে স্পর্শকাতর এ বিষয় নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন।
নীতি-নির্ধারকেরা বলছেন, এক্সন মোবিলের প্রস্তাবের ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ের পরামর্শক কমিটি গঠন করতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে একটি ফাইল পাঠানো হয়েছে বেশ কিছু দিন আগে। সেই ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
গত মার্চে এক্সন মোবিল এক প্রস্তাবে বলেছে, দেশের গভীর সমুদ্রের ১৫টি ব্লকে এক সাথে বরাদ্দ নিয়ে কাজ করতে চায়। পরে এ প্রস্তাব সংশোধন করে আরও স্পষ্টভাবে তারা জানিয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ৩০ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় সোয়া তিন লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগে আগ্রহী এক্সন মবিল। ২০১২ সালে মিয়ানমার ও ২০১৪ সালে ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির পর সাগরে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের মালিকানা। পরে ভারত ও মিয়ানমার তাদের সমুদ্রসীমায় গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় গ্যাসের মজুত কত, তা এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
সম্প্রতি বিদেশি তেল কোম্পানি ক্রিস্ট এনার্জি এক অনুষ্ঠানে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে জানিয়েছে, বাংলাদেশের সাগর অংশ ভারত ও মিয়ানমার সাগর বক্ষের চেয়ে বেশি সম্ভাবনাময়। এখানকার ভূ-কাঠামো গ্যাস পাওয়ার সম্ভবনাকে ইঙ্গিত করে। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় মিয়ানমার ‘সুওয়ে’ গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। সেখানে ৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুটের (টিসিএফ) বেশি গ্যাস মজুত রয়েছে। একই সীমান্তে বাংলাদেশের দুটি ব্লক হচ্ছে এসএস-১১ এবং ডিএস-১২। এসএস-১১ ব্লকে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি সান্তোশ কিছু কাজ করে বাংলাদেশ থেকে চলে যায়। অন্যদিকে ডিএস-১২ ও সিসমিক জরিপের কাজ করে বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেয় কোরীয় কোম্পানি পসকো দাইয়্যু করপোরেশন।