ঢাকা ০৬:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
আজকের সেহরি ও ইফতার ::
ঢাকায় সেহেরি ৪:৩৩ মি. ইফতার ৬:১৭ মি.:: চট্টগ্রামে সেহেরি ৪:২৮ মি. ইফতার ৬:১১ মি. :: রাজশাহীতে সেহেরি ৪:৩৯ মি. ইফতার ৬:২৪ মি. :: খুলনায় সেহেরি ৪:৩৭ মি. ইফতার ৬:২০ মি. :: বরিশালে সেহেরি ৪:৩৪ মি. ইফতার ৬:১৭ মি. :: সিলেটে সেহেরি ৪:২৬ মি. ইফতার ৬:১১ মি. :: রংপুরে সেহেরি ৪:৩৭ মি. ইফতার ৬:২২ মি. :: ময়মনসিংহে সেহেরি ৪:৩২ মি. ইফতার ৬:১৭ মি. ::::

কলাপাড়ায় মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৫১:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৫৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এ.এম মিজানুর হমান বুলেট, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মাদ্রাসা ফান্ডের অর্থ আত্মসাতসহ একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। তিনি নীলগঞ্জ দৌলতপুর ছালেহিয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন গত ৪ বছর ধরে।

১৯৪০ সালে স্থাপিত ঐতিহ্যবাহী প্রাচীণ এ মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ এম এ রউফ মিয়া পরলোক গমন করেন ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি। তাঁর মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান একই মাদ্রাসার প্রভাষক মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান। অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও ওই প্রতিষ্ঠানে আজ পর্যন্ত অধ্যক্ষ পদটি শুন্য রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যক্ষ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে সে পদে আবেদনের জন্য অযোগ্য উল্লেখ করে সেই নিয়োগ কার্যক্রম ইচ্ছাকৃত ভাবে বাতিল করছেন তিনি।

অভিযোগকারিরা বলছেন, কৌশল করে মোস্তাফিজুর রহমানের অনুসারী লোকজনকে এডহক কমিটিতে যোগদান করিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন এই অধ্যক্ষ। এমনকি নিজেকে ভারপ্রাপ্ত রেখেই বাকি চাকরি জীবন কাটাতে চান মাওলানা মোস্তাফিজ। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো অনুসারে একটি আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হতে হলে কমপক্ষে সিনিয়র প্রভাষক হতে হয়। কিন্তু বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেবলই একজন প্রভাষক। তবে নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে এবং প্রতিষ্ঠানের ফান্ডের বিপুল পরিমান অর্থের লোভে পড়ে ভারপ্রাপ্ত থেকেই প্রতিষ্ঠান চালিয়ে নেবার অভিলাশ ব্যক্ত করে যাচ্ছেন প্রকাশ্যে। একারনে অন্যান্য পদেও এনটিআরসিএ কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ইচ্ছাকৃত ভাবে চাহিদা দেননি এই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ফলে ব্যহত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম। দক্ষ এবং অভিজ্ঞ অধ্যক্ষের অভাবে প্রতিষ্ঠানটি হারাচ্ছে তার অতিতের ঐতিহ্য। ওই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক সদস্য মো. ফারুক খান জানান, মাওলানা মোস্তাফিজ মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই অনিয়ম করে যাচ্ছেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে কৌশল করে প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ পদটি শূন্য রাখা। আত্বীয়দের মাধ্যমে মামলা দিয়ে ওই পদটি চার বছর ধরে অপূর্ণ রাখছেন। এছাড়া মাদরাসার নামে বিপুল সম্পত্তি থাকলেও তার আয় ব্যয়ের কোন হিসাব দিচ্ছেন না । অপর অভিভাবক সদস্য আনোয়ার মুন্সি জানান, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনিয়মের মধ্যেদিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। কারো তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যায়ের হিসেব দিচ্ছেন না তিনি।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির (এডহক) সভাপতি নূর-ই আলম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত বিভিন্ন ফি,বেতন, সরকার প্রদত্ব টিউশন ফি, ফরম ফিলাপের আয়-ব্যয়ের হিসেব চাইতে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমানের বিরাগভাজন হয়েছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমানের ডিও লেটার থাকা সত্বেও নিয়োমিত গভার্ণিং বডি গঠণের ঠিক আগ মূহুর্তে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ’র আপন ভাগনে জামাইকে দিয়ে আদালতে একটি ফরমায়েসী অভিযোগ দিয়ে নিয়মিত গভার্ণিং বডি গঠণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এ নিয়ে ৪ বার প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়মিত গভার্ণিং বডি গঠণে বাঁধ সেজেছেন তিনি। এতে করে মাদ্রাসা পরিচালনায় যেমন ব্যাঘাত ঘটছে, একইভাবে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে পাঠদানেও। সভাপতিকে না জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিনের পর দিন মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকছেন বলেও অভিযোগ করেন আজাদ। তিনি বলেন, অধ্যক্ষের পদ আটকে রেখে শুধু অধ্যক্ষ নিয়োগেই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেননি তিনি, নিয়মিত কমিটি না থাকায় অন্যান্য পদেও নিয়োগ দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলা করে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করেননি তিনি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের সকল আয় ব্যয়ের হিসাব সঠিক ভাবে তার কাছে রয়েছে। তবে পরিচালনা কমিটির (এডহক) সভাপতি তাকে নিয়ে মিথ্যা গুজাব রটাচ্ছেন।
এবিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান জানান, যিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়ীত্ব পালন করছেন আসলে ওই পদের জন্য তিনি যোগ্য নন। কৌশল করে তিনি অধ্যক্ষ পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। এবিষয়ে খুব দ্রুতই পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

 

বা/খ : জই

The short URL of the present article is: https://banglakhaborbd.com/hiq2

নিউজটি শেয়ার করুন

কলাপাড়ায় মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৪:৫১:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩

এ.এম মিজানুর হমান বুলেট, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মাদ্রাসা ফান্ডের অর্থ আত্মসাতসহ একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। তিনি নীলগঞ্জ দৌলতপুর ছালেহিয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন গত ৪ বছর ধরে।

১৯৪০ সালে স্থাপিত ঐতিহ্যবাহী প্রাচীণ এ মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ এম এ রউফ মিয়া পরলোক গমন করেন ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি। তাঁর মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান একই মাদ্রাসার প্রভাষক মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান। অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও ওই প্রতিষ্ঠানে আজ পর্যন্ত অধ্যক্ষ পদটি শুন্য রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যক্ষ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে সে পদে আবেদনের জন্য অযোগ্য উল্লেখ করে সেই নিয়োগ কার্যক্রম ইচ্ছাকৃত ভাবে বাতিল করছেন তিনি।

অভিযোগকারিরা বলছেন, কৌশল করে মোস্তাফিজুর রহমানের অনুসারী লোকজনকে এডহক কমিটিতে যোগদান করিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন এই অধ্যক্ষ। এমনকি নিজেকে ভারপ্রাপ্ত রেখেই বাকি চাকরি জীবন কাটাতে চান মাওলানা মোস্তাফিজ। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো অনুসারে একটি আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হতে হলে কমপক্ষে সিনিয়র প্রভাষক হতে হয়। কিন্তু বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেবলই একজন প্রভাষক। তবে নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে এবং প্রতিষ্ঠানের ফান্ডের বিপুল পরিমান অর্থের লোভে পড়ে ভারপ্রাপ্ত থেকেই প্রতিষ্ঠান চালিয়ে নেবার অভিলাশ ব্যক্ত করে যাচ্ছেন প্রকাশ্যে। একারনে অন্যান্য পদেও এনটিআরসিএ কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ইচ্ছাকৃত ভাবে চাহিদা দেননি এই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ফলে ব্যহত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম। দক্ষ এবং অভিজ্ঞ অধ্যক্ষের অভাবে প্রতিষ্ঠানটি হারাচ্ছে তার অতিতের ঐতিহ্য। ওই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক সদস্য মো. ফারুক খান জানান, মাওলানা মোস্তাফিজ মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই অনিয়ম করে যাচ্ছেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে কৌশল করে প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ পদটি শূন্য রাখা। আত্বীয়দের মাধ্যমে মামলা দিয়ে ওই পদটি চার বছর ধরে অপূর্ণ রাখছেন। এছাড়া মাদরাসার নামে বিপুল সম্পত্তি থাকলেও তার আয় ব্যয়ের কোন হিসাব দিচ্ছেন না । অপর অভিভাবক সদস্য আনোয়ার মুন্সি জানান, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনিয়মের মধ্যেদিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। কারো তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যায়ের হিসেব দিচ্ছেন না তিনি।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির (এডহক) সভাপতি নূর-ই আলম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত বিভিন্ন ফি,বেতন, সরকার প্রদত্ব টিউশন ফি, ফরম ফিলাপের আয়-ব্যয়ের হিসেব চাইতে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমানের বিরাগভাজন হয়েছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমানের ডিও লেটার থাকা সত্বেও নিয়োমিত গভার্ণিং বডি গঠণের ঠিক আগ মূহুর্তে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ’র আপন ভাগনে জামাইকে দিয়ে আদালতে একটি ফরমায়েসী অভিযোগ দিয়ে নিয়মিত গভার্ণিং বডি গঠণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এ নিয়ে ৪ বার প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়মিত গভার্ণিং বডি গঠণে বাঁধ সেজেছেন তিনি। এতে করে মাদ্রাসা পরিচালনায় যেমন ব্যাঘাত ঘটছে, একইভাবে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে পাঠদানেও। সভাপতিকে না জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিনের পর দিন মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকছেন বলেও অভিযোগ করেন আজাদ। তিনি বলেন, অধ্যক্ষের পদ আটকে রেখে শুধু অধ্যক্ষ নিয়োগেই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেননি তিনি, নিয়মিত কমিটি না থাকায় অন্যান্য পদেও নিয়োগ দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলা করে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করেননি তিনি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের সকল আয় ব্যয়ের হিসাব সঠিক ভাবে তার কাছে রয়েছে। তবে পরিচালনা কমিটির (এডহক) সভাপতি তাকে নিয়ে মিথ্যা গুজাব রটাচ্ছেন।
এবিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান জানান, যিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়ীত্ব পালন করছেন আসলে ওই পদের জন্য তিনি যোগ্য নন। কৌশল করে তিনি অধ্যক্ষ পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। এবিষয়ে খুব দ্রুতই পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

 

বা/খ : জই

The short URL of the present article is: https://banglakhaborbd.com/hiq2