কটিয়াদীতে তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন
- আপডেট সময় : ০৬:৪৬:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৫১৩ বার পড়া হয়েছে

// এম এ কুদ্দুছ, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) থেকে //
সকাল থেকে চড়া রোদ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে তাপমাত্রার পারদ। দিনের তীব্র তাপদাহ, আর রাতের হাঁসফাঁস গরম। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে লোডশেডিং। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে গত কয়েকদিন ধরে অতিরিক্ত খরতাপে কয়েক লাখ মানুষ গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গরমের তাপমাত্রাকে তাল দিয়ে সমানভাবে বিদ্যুৎ লোডশেডিং ১৪-১৯ ঘন্টা হওয়ার কারণে এ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এসবের ফলে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে শুরু করে বেসরকারি হাসপাতালে অতিরিক্ত গরম ও বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের ফলে বিভিন্ন বয়সের লোকদের উচ্চ রক্ত চাপ জনিত রোগ, সর্দি-কাশি, জ্বরসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে চরমভাবে। এদিকে বিদ্যুৎ না পেয়েও গ্রাহকদেরকে ভৌতিক বিদ্যুৎ বিলের আওতায় পড়ছে অনেকে।
কটিয়াদী বিদ্যুৎ অফিসের বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে যে , সিস্টেম লস এর নামে অন্তত ৯০% বিদ্যুৎ গ্রাহকের ৩০% বিদ্যুৎবিল বাড়ানো হয়েছে যা অজানা বা ভুয়া বিদ্যুৎ বিল হিসাবে অভিহিত । এসব কারণে বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু অসাধু কর্মচারী আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এদিকে কোনো খেয়াল নিচ্ছেন না বলে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অভিযোগ। সব মিলিয়ে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে জনজীবন বিপর্যস্ত।
জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরেই উপজেলার গরমের সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছে লোডশেডিং। একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে কখন যে বিদ্যুৎ আসবে, তা নিয়েই আশঙ্কায় থাকছেন সাধারণ মানুষ। দিন-রাত মিলিয়ে ১৫-১৯ ঘন্টা চলে লোডশেডিং। সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে গ্রাম এলাকায়। সেখানে বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে। ১৯ ঘন্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না। নামাজ সময়গুলোতে বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুৎ না থাকায় ঠিকমত ঘুমতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে বয়স্ক, শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ঘনঘন বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে ফ্রিজ, কম্পিউটার, টেলিভিশনসহ মূল্যবান ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র। এমনকি উপজেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মীরা সময়মত সংবাদ প্রেরণ ও পরিবেশন করতে পারছেন না লোডশেডিংয়ের জন্য। চরম গরম আর লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অনেককেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
কটিয়াদী পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৩-১৪ মেগাওয়াট। বর্তমানে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ৫ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ না থাকায় হচ্ছে লোডশেডিং। তাই এ বিষয়ে আলোচনার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ এর সাথে সাক্ষাৎ করেন কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় কটিয়াদী উপজেলার জন্য বিদ্যুৎ বরাদ্দ বাড়ানোর ব্যাপারে সংসদের সহযোগিতা চাওয়া হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্যও জনদুর্ভোগ লাঘব করতে বিদ্যুৎ বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।
কটিয়াদী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মোঃ সোহরাব হোসান বলেন, কটিয়াদী জোনালে বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে এবং এমপি মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে লোডশেডিং কমে আসবে।