ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি :
ঈশ্বরদীতে শিশু শিক্ষার্থী রামিমকে (৮) পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রামিম উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ৪১-নং চরমিরকামারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র এবং একই এলাকার মোঃ সজীব হোসেনের পুত্র। অভিযুক্ত মোঃ ফরহাদ হোসেন একই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক।
থানায় অভিযোগ এবং এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার ১২-ই মার্চ প্রতিদিনের মত বিদ্যালয়ে আসেন রামিম। শ্রেণী কক্ষে পাঠদানের সময় হলে তাদের বিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদান করছিলেন শিক্ষক ফরহাদ হোসেন। এ সময় অন্যান্যদের মত রামিমকে ধমকের স্বরে পড়া জিজ্ঞেস করেন শিক্ষক ফরহাদ। শিক্ষকের ধমকে ভীত রামিম সঠিক পড়া বলতে না পারায় তাকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করেন ফরহাদ। পেটানো শেষে রামিম চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে যায়। তাকে শিক্ষক ফরহাদ বেধড়ক পিটিয়েছে বলে জানায় পরিবারকে। সে সময় পরিবারের সদস্যরা রামিমের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখে আহত ছেলেকে নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হেনা মোস্তফা কামাল লিটনকে অবহিত করেন এবং ছেলেকে এমন অমানবিক ভাবে পেটানোর বিচার দাবি করেন। তবে বিদ্যালয় থেকে কোন প্রকার বিচার না পেয়ে আহত রামিমের বাবা বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানতে চাইলে অত্র বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম মিলন বলেন, বিষয়টি অপ্রত্যাশিত ভাবে ঘটে গেছে। আসলে আমরা এমন কিছুর জন্য কখনই প্রস্তুত ছিলাম না। তবে বিষয়টি নিয়ে সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে আহত রামিমের বাবা বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রামিমের বাবার অভিযোগের পর টনক নড়ে প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের । এরপর দফায় দফায় সালিশের জন্য সামাজিক ভাবে চাপ দিতে থাকেন রামিমের বাবাকে। অতঃপর সোমবার রাতের অন্ধকারে নাম মাত্র সালিশ করে বিষয়টি ধামা চাপা দেওয়ার জোর প্রচেষ্টায় বসেছেন ইউপিসদস্যসহ অভিযুক্তরা বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিভাবক জানান, এই বিদ্যালয়ে এমন ঘটনা এটাই প্রথম না। এখানে লেখা পড়ার চেয়ে নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়েই শিক্ষকরা বেশী চর্চা করেন। এখানকার প্রধান শিক্ষকতো জাতীয় পতাকা অবমাননার মত অপরাধ করেও বীর দর্পে কাজ করে যাচ্ছেন। এসমস্ত অন্যায়ের কোন দৃশ্যমান বিচার না হওয়াতেই এখানকার শিক্ষকরা সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের খেয়াল খুশিমত কাজ করেন। ফলশ্রুতিতে এখানকার শিক্ষার পরিবেশ ও মান দুটোই নষ্ট হচ্ছে।
তবে অনতিবিলম্বে উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান অটুট রাখার জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বা/খ: জই