ঢাকা ১১:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইসলামপুরে নদী ভাঙনের কবলে দিশেহারা নদী তীরবর্তী মানুষ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:০৩:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৫৩৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// লিয়াকত হোসাইন লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি //

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র এবং দশ আনীর ভাঙন বেড়েই চলেছে। এতে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের প্রতিদিনই নদীর গর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটাসহ ফসলি জমি। ভাঙনে শিকার হয়ে অনেকেই ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে গোয়ালের চর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রাম, গাইবান্ধা ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামে দশআনী নদী,ও পচাবহলা যমুনার শাখা নদী ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়। তীব্র ভাঙনের ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছে নদীপাড়ে মানুষগুলো।

অন্যদিকে পৌর এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদী সরদারপাড়া নির্মাণাধীন ব্রিজ সংলগ্নে ভাঙন ও পলবান্ধা ইউনিয়নের সিরাজাবাদ পাকা রাস্তার শেষ মাথায় ব্রহ্মপুত্র নদে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি সরকারি ঘরসহ অসংখ্য বসদভিটা আবাদী ফসলি জমি।

এছাড়াও যমুনা নদীর বেলগাছা ইউনিয়নের প্রজাপতি চেংগানিয়া, মন্ডলপাড়া, কাঁসারী ডোবা, আকন্দপাড়া এলাকায় যমুনার তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলায় যমুনা ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে প্রায় শতাধিক বাড়িসহ যমুনার গর্ভে বিলীন হচ্ছে প্রতিদিনি ফসলি জমি। অতিমাত্রায় নদের ভাঙনে আতঙ্কে রয়েছে নদের তীরবর্তী বসবাসরত মানুষ।

ভাঙন শিকার গাইবান্ধা চন্দনপুর বাসিন্দরা জানান, ভাঙনের ইতিমধ্যে ফসলি জমিসহ অনেকের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে।

অন্যদিকে, গোায়ালেরচর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর বালুরচর এলাকায় ব্রক্ষপুত্র নদে ভাঙন আতংকে রয়েছে ওইসব নদী পাড়ের শত শত মানুষ। বিলীন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে রাস্তা ঘাট,জন বসতি,ফসলি জমি,হাট বাজার, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

ভাঙনের শিকার মোরাদজ্জামাল জানান, আমার বাড়ি এ যাবৎ ৭ বার ভেঙেছি এখন আর উপায় নেই অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হবে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক যুবলীগের নেতা বলেন অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে এই ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। কোটি টাকা ব্যয় মোহাম্মদপুর বালুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এখন হুমকির দ্বারপ্রান্তে । আতংকে রয়েছে মোহাম্মদ পশ্চিমপাড়া, মোহাম্মদপুর দক্ষিণপাড়া, মোহাম্মদপুর পূর্বপাড়া ও সভুকুড়া গ্রাম।

ভাঙন কবলিত এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানায়, প্রতি বছর ভাঙছে তো ভাঙছেই। অতি দ্রুত ভাঙন রোধ করতে না পারলে ওই ইউনিয়েনর সাথে ইসলামপুরের যোগাযোগ এবং বকশীগঞ্জ উপজেলার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এ বছর শুরুতেই যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে মনে হয় না এলাকার বাকি অংশ এবার ভাঙনকবল থেকে রক্ষা পাবে। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে, গ্রামগুলো আর রক্ষা পাবে না। ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চান পাড়ের মানুষ।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, আমি খবর পেয়ে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি।  ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি ও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করেছি।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, গোয়ালের চর ইউপি মোহাম্মদপুর ভাঙন রোধে ৭ হাজার ৫শ’ জিও ব্যাগ প্রায় ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ইসলামপুরে নদী ভাঙনের কবলে দিশেহারা নদী তীরবর্তী মানুষ

আপডেট সময় : ০৫:০৩:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

// লিয়াকত হোসাইন লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি //

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র এবং দশ আনীর ভাঙন বেড়েই চলেছে। এতে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের প্রতিদিনই নদীর গর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটাসহ ফসলি জমি। ভাঙনে শিকার হয়ে অনেকেই ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে গোয়ালের চর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রাম, গাইবান্ধা ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামে দশআনী নদী,ও পচাবহলা যমুনার শাখা নদী ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়। তীব্র ভাঙনের ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছে নদীপাড়ে মানুষগুলো।

অন্যদিকে পৌর এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদী সরদারপাড়া নির্মাণাধীন ব্রিজ সংলগ্নে ভাঙন ও পলবান্ধা ইউনিয়নের সিরাজাবাদ পাকা রাস্তার শেষ মাথায় ব্রহ্মপুত্র নদে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি সরকারি ঘরসহ অসংখ্য বসদভিটা আবাদী ফসলি জমি।

এছাড়াও যমুনা নদীর বেলগাছা ইউনিয়নের প্রজাপতি চেংগানিয়া, মন্ডলপাড়া, কাঁসারী ডোবা, আকন্দপাড়া এলাকায় যমুনার তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলায় যমুনা ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে প্রায় শতাধিক বাড়িসহ যমুনার গর্ভে বিলীন হচ্ছে প্রতিদিনি ফসলি জমি। অতিমাত্রায় নদের ভাঙনে আতঙ্কে রয়েছে নদের তীরবর্তী বসবাসরত মানুষ।

ভাঙন শিকার গাইবান্ধা চন্দনপুর বাসিন্দরা জানান, ভাঙনের ইতিমধ্যে ফসলি জমিসহ অনেকের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে।

অন্যদিকে, গোায়ালেরচর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর বালুরচর এলাকায় ব্রক্ষপুত্র নদে ভাঙন আতংকে রয়েছে ওইসব নদী পাড়ের শত শত মানুষ। বিলীন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে রাস্তা ঘাট,জন বসতি,ফসলি জমি,হাট বাজার, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

ভাঙনের শিকার মোরাদজ্জামাল জানান, আমার বাড়ি এ যাবৎ ৭ বার ভেঙেছি এখন আর উপায় নেই অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হবে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক যুবলীগের নেতা বলেন অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে এই ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। কোটি টাকা ব্যয় মোহাম্মদপুর বালুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এখন হুমকির দ্বারপ্রান্তে । আতংকে রয়েছে মোহাম্মদ পশ্চিমপাড়া, মোহাম্মদপুর দক্ষিণপাড়া, মোহাম্মদপুর পূর্বপাড়া ও সভুকুড়া গ্রাম।

ভাঙন কবলিত এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানায়, প্রতি বছর ভাঙছে তো ভাঙছেই। অতি দ্রুত ভাঙন রোধ করতে না পারলে ওই ইউনিয়েনর সাথে ইসলামপুরের যোগাযোগ এবং বকশীগঞ্জ উপজেলার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এ বছর শুরুতেই যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে মনে হয় না এলাকার বাকি অংশ এবার ভাঙনকবল থেকে রক্ষা পাবে। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে, গ্রামগুলো আর রক্ষা পাবে না। ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চান পাড়ের মানুষ।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, আমি খবর পেয়ে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি।  ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি ও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করেছি।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, গোয়ালের চর ইউপি মোহাম্মদপুর ভাঙন রোধে ৭ হাজার ৫শ’ জিও ব্যাগ প্রায় ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।