ঢাকা ১২:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইভিএমের নতুন প্রকল্প প্রস্তাব স্থগিত : ইসি সচিব

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৫:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৪৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দুই লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর নতুন প্রকল্প আপাতত প্রক্রিয়াকরণ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। এর ফলে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট হচ্ছে না বলে জানা গেছে।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, পরিকল্পনা কমিশন সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) প্রকল্পটি বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সরকারের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় আপাতত প্রক্রিয়াকরণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ পরিকল্পনা কমিশন আমাদের জানিয়েছে এই মুহূর্তে প্রকল্পটির কার্যক্রম প্রক্রিয়া করছে না। এই মুহূর্তে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণ হচ্ছে না। অর্থাৎ এই মুহূর্তে এটা রান করবে না, পরবর্তী সময়ে হয়তো রান করবে।

প্রকল্প না হলে কতগুলো আসনে ইভিএম হবে এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনের পূর্বের সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে সচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তার রোডম্যাপে বলেছিল, যদি নতুন ইভিএম কিনতে পারে তাহলে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট হবে। নতুন ইভিএম না পেলে বিদ্যমান ইভিএমে দিয়ে যতগুলো আসনে ভোট করা সম্ভব সেটা করা হবে। এই সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছে। এখনও সেটা বহাল আছে।’ পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলো কমিশন জানিয়ে দেবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, আগেই বলা হয়েছে আমাদের হাতে যতগুলি ইভিএম আছে তা নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে। সেক্ষেত্রে ৫০ টা হতে পারে, ৬০টা হতে পারে বা ৭০টা হতে পারে। কোয়ালিটি চেক করে বলতে পারবো বাস্তবে কতটিতে ইভিএম করা যাবে।

তিনি আরো বলেন, ইসির কাছে দেড় লাখ ইভিএম মেশিন আছে। এর মধ্যে কিছু হয়তো সচল নাও থাকতে পারে। সেগুলোর গুণগত অবস্থা যাচাই করে তা নিয়ে নির্বাচন করা হবে।

আর্থিক সক্ষমতা থাকলে ভবিষ্যতে এ প্রকল্প আবার গ্রহণ করা হতে পারে বলেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান। তিনি বলেন, ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে হবে কী হবে না সেটা কমিশন বলতে পারবেন।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমি সরকারের বার্তাটা আপনাদের জানিয়েছি। সরকারের সিদ্ধান্ত কমিশনকে অবহিত করেছি।’ সরকারের সিদ্ধান্ত রোববার (২২ জানুয়ারি) ইসি জেনেছে বলেও জানান সচিব।

প্রকল্প না হওয়ায় কমিশন হতাশ কিনা জানতে চাইলে সচিব জাহাঙ্গীর বলেন, সেটা কমিশনই বলতে পারবে।

নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ইভিএম কিনতে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় গত ১৯ অক্টোবর। কয়েকদফা চিঠি চালাচালি শেষে গত ১৭ জানুয়ারি একনেক সভায় তোলার তোড়জোড় করা হয়। ওই বৈঠকে টেবিল আকারে প্রকল্পটি ওঠার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছিল ইসি। তবে শেষ পর্যন্ত এটা আর ওঠেনি।

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ১৫০ আসনে ইভিএমে নির্বাচনের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসি। সে প্রকল্পের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে দিলেও পাঁচ মাসেও সাড়া পায়নি। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) একনেকের সভার আলোচ্যসূচিতেও ছিল না ইভিএম প্রকল্প।

গত বছর কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর একে একে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, সাবেক সিইসিসহ কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংলাপ করে।

আগামী নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রস্তাবের মধ্যে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ইভিএমে ভোট করার বিরোধিতা করে। সংলাপে অংশ না নিলেও বিএনপির পক্ষ থেকে সরাসরি ইভিএমের বিরোধিতা করা হয়েছে। যদিও ক্ষমতাসীন দলসহ বেশ কিছু দল ইভিএমে ভোট নেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছে।

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে এই ইভিএমগুলো কিনেছিল ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইভিএমের নতুন প্রকল্প প্রস্তাব স্থগিত : ইসি সচিব

আপডেট সময় : ০৩:৩৫:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দুই লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর নতুন প্রকল্প আপাতত প্রক্রিয়াকরণ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। এর ফলে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট হচ্ছে না বলে জানা গেছে।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, পরিকল্পনা কমিশন সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) প্রকল্পটি বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সরকারের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় আপাতত প্রক্রিয়াকরণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ পরিকল্পনা কমিশন আমাদের জানিয়েছে এই মুহূর্তে প্রকল্পটির কার্যক্রম প্রক্রিয়া করছে না। এই মুহূর্তে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণ হচ্ছে না। অর্থাৎ এই মুহূর্তে এটা রান করবে না, পরবর্তী সময়ে হয়তো রান করবে।

প্রকল্প না হলে কতগুলো আসনে ইভিএম হবে এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনের পূর্বের সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে সচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তার রোডম্যাপে বলেছিল, যদি নতুন ইভিএম কিনতে পারে তাহলে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট হবে। নতুন ইভিএম না পেলে বিদ্যমান ইভিএমে দিয়ে যতগুলো আসনে ভোট করা সম্ভব সেটা করা হবে। এই সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছে। এখনও সেটা বহাল আছে।’ পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলো কমিশন জানিয়ে দেবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, আগেই বলা হয়েছে আমাদের হাতে যতগুলি ইভিএম আছে তা নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে। সেক্ষেত্রে ৫০ টা হতে পারে, ৬০টা হতে পারে বা ৭০টা হতে পারে। কোয়ালিটি চেক করে বলতে পারবো বাস্তবে কতটিতে ইভিএম করা যাবে।

তিনি আরো বলেন, ইসির কাছে দেড় লাখ ইভিএম মেশিন আছে। এর মধ্যে কিছু হয়তো সচল নাও থাকতে পারে। সেগুলোর গুণগত অবস্থা যাচাই করে তা নিয়ে নির্বাচন করা হবে।

আর্থিক সক্ষমতা থাকলে ভবিষ্যতে এ প্রকল্প আবার গ্রহণ করা হতে পারে বলেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান। তিনি বলেন, ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে হবে কী হবে না সেটা কমিশন বলতে পারবেন।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমি সরকারের বার্তাটা আপনাদের জানিয়েছি। সরকারের সিদ্ধান্ত কমিশনকে অবহিত করেছি।’ সরকারের সিদ্ধান্ত রোববার (২২ জানুয়ারি) ইসি জেনেছে বলেও জানান সচিব।

প্রকল্প না হওয়ায় কমিশন হতাশ কিনা জানতে চাইলে সচিব জাহাঙ্গীর বলেন, সেটা কমিশনই বলতে পারবে।

নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ইভিএম কিনতে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় গত ১৯ অক্টোবর। কয়েকদফা চিঠি চালাচালি শেষে গত ১৭ জানুয়ারি একনেক সভায় তোলার তোড়জোড় করা হয়। ওই বৈঠকে টেবিল আকারে প্রকল্পটি ওঠার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছিল ইসি। তবে শেষ পর্যন্ত এটা আর ওঠেনি।

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ১৫০ আসনে ইভিএমে নির্বাচনের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসি। সে প্রকল্পের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে দিলেও পাঁচ মাসেও সাড়া পায়নি। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) একনেকের সভার আলোচ্যসূচিতেও ছিল না ইভিএম প্রকল্প।

গত বছর কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর একে একে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, সাবেক সিইসিসহ কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংলাপ করে।

আগামী নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রস্তাবের মধ্যে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ইভিএমে ভোট করার বিরোধিতা করে। সংলাপে অংশ না নিলেও বিএনপির পক্ষ থেকে সরাসরি ইভিএমের বিরোধিতা করা হয়েছে। যদিও ক্ষমতাসীন দলসহ বেশ কিছু দল ইভিএমে ভোট নেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছে।

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে এই ইভিএমগুলো কিনেছিল ছিল।