ঢাকা ০১:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইতিহাস-ঐতিহ্য-০২‘সাজাদপুরে’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারিবাড়ি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১১:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪৬৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শামছুর রহমান শিশিরঃ
ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার সাহিত্য গগণে ও বিশ্বের জ্ঞান পরিমন্ডলে উজ্জ্বল তারকারূপে আজও চির দেদিপ্যমান (ভারস্যাটাইল জিনিয়াস্) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত করতোয়া নদী, কবির সেই ছোট নদীর উত্তর পশ্চিম তীরে সিরাজগঞ্জ জেলার মফস্বল শহর ‘সাজাদপুরে’ (শাহজাদপুরে) কবিগুরুর কাছারিবাড়ির অবস্থান। ছোট নদীর পূর্বের নাম ছিল খোনকারের জোলা। করতোয় নদী বিধৌত বোনাজন আর উর্বর মাটির মফস্বল শহর শাহজাদপুর। সেখানের মাটির ঘ্রাঁণ কবির সাহিত্য সৃজনের প্রেরণা জুগিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ আমাদের, রবীন্দ্রনাথ সমগ্র বিশ্বের। আমাদের অনেক দৈনতা আছে ,আছে অভাব। তবুও আমরা বলতে পারি আমাদের রবীন্দ্রনাথ আছেন। বাঙ্গালী সাহিত্যের সৃষ্টিশীলতা আর মননশীলতার অসামান্য রূপকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কবি শাহজাদপুরে এসেছিলেন জমিদারী দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে। এখানরকার নদী-নালা, খাল-বীল এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। এখানে তিনি সাময়িকভাবে বসবাস করতেন। তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন কুষ্টিয়া জেলার শিলাইদহে। এখানকার করতোয় ও শাখানদী খোনকারের জোলা (কবির ছোটনদী)র প্রতি কবির ছিল গভীর টান। করতোয়া বিধৌত শাহজাদপুরের প্রকৃতিকে ভালবেসে আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে হৃদয় উজাড় করে দিয়ে সৃষ্টি করেছেন দুর্লভ সাহিত্য। এখানে এসে কবিগুরু শুধু দুর্লভ সাহিত্যই রচনা করেননি, চিন্তাভাবনা করেছেন এলাকার অবহেলিত জনমানুষের সুখ-দুঃখ ও এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নের ব্যাপারেও। বংশ পরম্পরায় জানা যায়, কবিগুরু রবীন্দ্রথান ঠাকুর শাহজাদপুরবাসীকে গাভী পালনে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি জমিদারী তদারকি করতে শাহজাদপুরের কাছারিবাড়িতে আসেন। শাহজাদপুর অঞ্চলে কবিগুরু পশুপালনের সম্ভাবনা দেখে উপমহাদেশের হরিয়ানা ও মুলতান থেকে তিনি বেশকিছু উন্নতজাতের ষাঁড় ও গাভী শাহজাদপুরে নিয়ে আসেন। মূলতঃ সেই সময় থেকেই শাহজাদপুরের বাথানে দেশী উন্নতজাতের গরুর মধ্যে সংকরায়ন শুরু হয়। ফলশ্রুতিতে, উন্নতজাতের গাভীর ওপর নীর্ভর করে পরবর্তীতে শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ী এলাকায় গড়ে ওঠে মিল্কভিটার বিশাল কারখানা। পাল্টে যেতে থাকে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থা। প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড খ্যাত এলাকা হিসাবে শাহজাদপুর দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করে। এটাও ছিল কবিগুরুর অসামান্য অবদান। শাহজাদপুরের কাছারিবাড়ি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত একটি ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিন তৌজির অন্তর্গত ডিহি শাহজাদপুরের জমিদারী একদা নাটোরের রানী ভবানীর জমিদারীর অংশ ছিল। ১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারী নিলামে উঠলে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর মাত্র তের টাকা দশ আনায় এই জমিদারী কিনে নেন। জমিদারীর সাথে সাথে ওই কাছারিবাড়ীও ঠাকুর পরিবারের হস্তগত হয়েছিল বলে ধারনা করা হয়। আগে এই কাছারিবাড়ীর মালিক ছিল নীলকর সাহেবরা। ১৮৯০ সাল থেকে ১৮৯৬ সাল সময়কাল পর্যন্ত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারী দেখাশোনার কাজে শাহজাদপুরে সাময়িকভাবে বসবাস করতেন। তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহে। সম্ভবত এই কারনেই শিলাইদহে তাঁর বাসগৃহ কুঠিবাড়ী নামে এবং শাহজাদপুরের বাড়িটি কাছারিবাড়ি নামে পরিচিত। শাহজাদপুরে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন পালকিতে, নৌকায় ও পায়ে হেঁটে। শাহজাদপুর পৌর এলাকার প্রাণকেন্দ্র দ্বারিয়াপুর বাজারে অবস্থিত উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহত কাপড়ের হাটের দক্ষিণ পাশে এক সবুজ শ্যমল পরিবেশে কাছারিবাড়ির অবস্থান। শাহজাদপুরের কাছারিবাড়ী ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত একটি দ্বিতল ভবন। ভবনটির দৈর্ঘ্য ২৬.৮৫ মিটার ,প্রস্থ ১০.২০ মিটার এবং উচ্চতা ৮.৭৪ মিটার। ভবনটির দ্বোতলার সিঁড়ি ব্যতিত মোট সাতটি কক্ষ রয়েছে। ভবনটির উত্তর দক্ষিণে একই মাপের প্রশস্ত বাড়ান্দা, বাড়ান্দার গোলাকৃতির জোরামাপের খাম, উপরাংশে আছে অলংকরণ করা বড় মাপের দরজা, জানালা ও ছাদের ওপরে প্যারাপেট দেয়ালে পোড়ামাটির শিল্পকর্ম দর্শনাথীদের বিশেষভাবে দৃষ্টি কেড়ে থাকে। ভবনটির জানালা দিয়ে চারপাশের মনোরম, মনোমুগ্ধকর পরিবেশ কবি উপলব্ধি করতেন। কাছারিবাড়িতে বসেই কবি প্রাণভরে ছোট নদী দেখতেন ও শুনতেন ছোটনদীর স্রোতধারার মিশ্রিত সুর। শাহজাদপুরে এসে মানুষ ও প্রকৃতিকে কবি গভীরভাবে ভালবাসেন। এখানে তিনি খুঁজে পান সাহিত্য সৃষ্টির নানা উপাদান। এখানে অবস্থানকালে তিনি রচনা করেন:-কাব্য: সোনারতরী , বৈষ্ণব কবিতা, দুটি পাখি, আকাশের চাঁদ, পুরস্কার, যমুনা, হৃদয়, ভরা ভাদরে, প্রত্যাক্ষান ও লজ্জা। চিত্রা:চিত্রা, শীত ও বসন্তে, নগর সংগীত। চৈতালী: নদীযাত্রা, মৃত্যুমাধুরী, স্মৃতি বিলয়, প্রথম চুম্বন, শেষ চুম্বন, যাত্রী, তৃণ, ঐশ্বর্য, স্বার্থ, প্রেয়সী, শান্তিময়, কালিদাসের প্রতি, কুমার, মানষলোক, কাব্যপ্রার্থনা, ইছামতী নদী, সুশ্রæসা, অশিক্ষাগ্রহন, বিদায়। করুনা: নববিবাহ, রজ্জিতা, বিদায়, হত্যভাগ্যের গান,গতোনিক, বঞ্চনা, সংকোচ, মানষপ্রতিভা, রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা, ব্যবধান, তারাপ্রসন্নের কীর্তি, ছুটি, সম্পত্তি, ক্ষুধিত পাষাণ, অতিথি, ইত্যাদি। ছিন্ন পত্রাবলী: ৩৮ টি বিভিন্ন ছিন্ন পত্রাবলী। প্রবন্ধ:পঞ্চভূতের অংশবিশেষ। নাটক:বিসর্জন।

শাহজাদপুর কাছাড়িবাড়ি দ্বোতলার উত্তর পাশে লিচুগাছ ও শোভা বর্ধনের জন্য নানা ফুলের গাছে ঘেরা কবি গুরুর অপরুপ কাচাড়িবাড়িটি বহুদুরের পথিকেরও দৃষ্টি আকর্ষন করে। কাছারিবাড়ীর চারদিক প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। প্রাচীরের আশেপাশে রয়েছে নানা দৃষ্টিনন্দন বৃক্ষের বাগান। কাছাড়িবাড়ীর ভিতরে একটি বকুলগাছ ছিল। কবি ওই গাছের নীচে বসে কবিতা লিখতেন। ওই বকুলগাছটি মারা গেলে সেখানে আরও একটি বকুলের চারা রোপন করা হয়েছে। সেই চারাটিও দিনদিন বড় হচ্ছে। কবিগুরুর কাছাড়িবাড়ী মিলনায়তনের উত্তর পার্শ্বে কালের স্বাক্ষী হয়ে আজও দাড়িয়ে আসে অভিশপ্ত নীলকুঠি। শাহজাদপুর উপজেলার রবীন্দ্র কাছারিবাড়ী প্রাঙ্গণের অভ্যন্তরে স্থাপিত ইংরেজ নীলকর সাহেবদের অবর্ননীয় অত্যাচার আর নির্যাতন এবং নীলচাষের নির্মম ইতিহাস বিজড়িত ‘নীলকুঠি’ সংস্কারের অভাবে ক্রমেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ীর ভিতরে বর্বরোচিত ঐতিহাসিক নীলকুঠিবাড়ির ধ্বংসবিশেষ আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির উত্তর-পশ্চিম আঙ্গিনা জুড়ে নীলকর সাহেবদের নানা স্মৃতি আজও বিদ্যমান রয়েছে সেখানে। শাহজাদপুরের অধিকাংশ জমিদারীর সিংহভাগই ছিল ইংরেজ নীলকর সাহেবদের নানা স্মৃতিবিজড়িত। অনুমান ১৬০০ থেকে ১৭০০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে ইংরেজ নীলকর সাহেবরা নীলচাষ করতে শাহজাদপুরে এসেছিলেন। ওই সময়ে শাহজাদপুরের দ্বারিয়াপুর ও কান্দাপাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় বিশাল জায়গা জুড়ে নীলকর সাহেবরা তাদের বাসস্থান ও নীলচাষের জন্য প্রশিক্ষন কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন। এটি ওই সময়ে শাহজাদপুর বাসীর নিকট নীল কুঠিবাড়ী হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে ওই কুঠিবাড়ীর পশ্চিম ও পূর্ব আঙ্গিনায় নীলকর সাহেবরা ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলীতে নির্মান করেন দুটি লাল রংয়ের দালান। পূর্ব আঙ্গিনার নীচ ও দ্বোতলাতে নীল কার্যালয় বা হেড অফিস হিসাবে নীলকর সাহেবরা ব্যবহার করতেন। ওইসব ভবনে স্থানীয় কৃষকদের ধরে এনে জোড়পূর্বক নীলচাষে বাধ্য করতে তাদের ওপর অমানুষিক নির্মম নির্যাতন চালাতেন নীলকর বাবুরা। সেই অভিশপ্ত স্মৃতিবিজড়িত নীলকুঠির ধ্বংশবিশেষ আজও কালের স্বাক্ষী হিসাবে এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সংস্কারের অভাবে ইতিহাসে বর্বরোচিত ইন্দো-ইউরোপীয় শৈলীতে নির্মিত ‘নীলকুঠি’ ক্রমেই নষ্ট হচ্ছে।

১৯৬৯ সালে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক অত্যন্ত জরাজীর্ণ অবস্থায় ওই ভবনটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসাবে ঘোষনা করা হয়। ওই ভবনটির বিভিন্ন সংস্কার করে ভবনটিতে রবীন্দ্রভিত্তিক আলোকচিত্র ও এ বাড়িতে কবির ব্যবহৃত প্রাপ্ত আসবাপত্র নিয়ে একটি স্মৃতি যাদুঘরের রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। দক্ষিন দিকের দরজা দিয়ে ওই যাদুঘরে প্রবেশ করতে হয়। নিচতলা ও দ্বোতলার বিশাল হলরূমসহ যাদুঘরের সকল কক্ষ সর্বসাধারনের জন্য উন্মুক্ত।চারদিকে পাঁকা দেয়ালে বেষ্ঠিত কাচাড়িবাড়ির আঙ্গিনাটিও বেশ বড়। এখানে রয়েছে রবীন্দ্র মিলনায়তন, কবির ব্যবহৃত সামগ্রীর মধে চৌকি, লেখার জন্য ডেস্ক, সোফাসেট, আরাম কেদারা, আলনা, আলমারি, সিন্দুক, ঘাস কাটার যন্ত্র, ওয়াটার ফিল্টার, ল্যাম্প, কবির স্বহস্তে আঁকা ছবি, দেশী বিদেশী রাষ্ট্রনায়ক, বিজ্ঞানীসহ গুণীজনদের সাথে কবির অগনিত ছবি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেঘেরা আম, জাম, জামিনি, কামিনি, বকুল গাছের সুশীতল ছায়া কবিগুরুর এসব অতীত স্মৃতি আর নেই। হারিয়ে গেছে স্মৃতির পট থেকে। কবির স্মৃতিবিজড়িত বকুলগাছ মারা গেছে। বকুলগাছের পুবদিকে একটি ইঁদারা ছিল যা ভরাট হয়ে গেছে। পূর্বদিকের দ্বোতলায় ওঠার সিঁড়িটি অনেক আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ‘আমাদের ছোটনদী চলে বাঁকে বাঁকে’ কবির সেই স্মৃতিবিজড়িত ছোট নদী অনেক আগেই মরে গেছে। ’৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক বই ও পান্ডুলিপি খোয়া গেছে।

এখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য নির্মান করা হয়েছে একটি বিশাল ও অত্যাধুনিক মিলনায়তন। কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতি বছরই সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন ২৫,২৬ ও ২৭ বৈশাখ এ তিনদিন ব্যাপী নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে কাছাড়িবাড়ীতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়। ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে কাছারিবাড়ীর কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তিনদিনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে থাকে রবীন্দ্র সংগীত, নৃত্য, কবিতা আবৃতি, কবিতালেখ্য, গীতিনৃত্য, গীতিনাট্য, নাটক, গ্রামীণ মেলা, রক্তদান কর্মসূচী, আলোচনাসভা, প্রবন্ধ পাঠসহ নানা আয়োজন। এই তিনদিনের ব্যাপক অনুষ্ঠান মালাকে ঘিরে পুরো শাহজাদপুর উৎসবের আমেজে মেতে ওঠে। এ উপলক্ষে শাহজাদপুররে বসে গ্রামীণ মেলা । দেশের সর্বপ্রথম কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষ্কর্য নির্মিত হয়েছে শাহজাদপুরের বিসিক বাসষ্ট্যান্ডে। শাহজাদপুর উপজেলার বিসিক বাসষ্ট্যান্ড মোড়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাস্কর্য নির্মানের কাজ শুরু করা হয়েছিল। এ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চয়ন ইসলাম। দেশের খ্যাতিমান ভাষ্কর্য নির্মাতা মৃণাল হক এই ভাষ্কর্য নির্মাণ করেছেন। ২৫ বৈশাখ রোববার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবার্র্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান শুরুর প্রাক্কালে সাবেক মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ভাষ্কর্যটি উদ্বোধন করেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ইতিহাস-ঐতিহ্য-০২‘সাজাদপুরে’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারিবাড়ি

আপডেট সময় : ০৯:১১:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২

শামছুর রহমান শিশিরঃ
ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার সাহিত্য গগণে ও বিশ্বের জ্ঞান পরিমন্ডলে উজ্জ্বল তারকারূপে আজও চির দেদিপ্যমান (ভারস্যাটাইল জিনিয়াস্) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত করতোয়া নদী, কবির সেই ছোট নদীর উত্তর পশ্চিম তীরে সিরাজগঞ্জ জেলার মফস্বল শহর ‘সাজাদপুরে’ (শাহজাদপুরে) কবিগুরুর কাছারিবাড়ির অবস্থান। ছোট নদীর পূর্বের নাম ছিল খোনকারের জোলা। করতোয় নদী বিধৌত বোনাজন আর উর্বর মাটির মফস্বল শহর শাহজাদপুর। সেখানের মাটির ঘ্রাঁণ কবির সাহিত্য সৃজনের প্রেরণা জুগিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ আমাদের, রবীন্দ্রনাথ সমগ্র বিশ্বের। আমাদের অনেক দৈনতা আছে ,আছে অভাব। তবুও আমরা বলতে পারি আমাদের রবীন্দ্রনাথ আছেন। বাঙ্গালী সাহিত্যের সৃষ্টিশীলতা আর মননশীলতার অসামান্য রূপকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কবি শাহজাদপুরে এসেছিলেন জমিদারী দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে। এখানরকার নদী-নালা, খাল-বীল এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। এখানে তিনি সাময়িকভাবে বসবাস করতেন। তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন কুষ্টিয়া জেলার শিলাইদহে। এখানকার করতোয় ও শাখানদী খোনকারের জোলা (কবির ছোটনদী)র প্রতি কবির ছিল গভীর টান। করতোয়া বিধৌত শাহজাদপুরের প্রকৃতিকে ভালবেসে আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে হৃদয় উজাড় করে দিয়ে সৃষ্টি করেছেন দুর্লভ সাহিত্য। এখানে এসে কবিগুরু শুধু দুর্লভ সাহিত্যই রচনা করেননি, চিন্তাভাবনা করেছেন এলাকার অবহেলিত জনমানুষের সুখ-দুঃখ ও এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নের ব্যাপারেও। বংশ পরম্পরায় জানা যায়, কবিগুরু রবীন্দ্রথান ঠাকুর শাহজাদপুরবাসীকে গাভী পালনে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি জমিদারী তদারকি করতে শাহজাদপুরের কাছারিবাড়িতে আসেন। শাহজাদপুর অঞ্চলে কবিগুরু পশুপালনের সম্ভাবনা দেখে উপমহাদেশের হরিয়ানা ও মুলতান থেকে তিনি বেশকিছু উন্নতজাতের ষাঁড় ও গাভী শাহজাদপুরে নিয়ে আসেন। মূলতঃ সেই সময় থেকেই শাহজাদপুরের বাথানে দেশী উন্নতজাতের গরুর মধ্যে সংকরায়ন শুরু হয়। ফলশ্রুতিতে, উন্নতজাতের গাভীর ওপর নীর্ভর করে পরবর্তীতে শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ী এলাকায় গড়ে ওঠে মিল্কভিটার বিশাল কারখানা। পাল্টে যেতে থাকে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থা। প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড খ্যাত এলাকা হিসাবে শাহজাদপুর দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করে। এটাও ছিল কবিগুরুর অসামান্য অবদান। শাহজাদপুরের কাছারিবাড়ি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত একটি ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিন তৌজির অন্তর্গত ডিহি শাহজাদপুরের জমিদারী একদা নাটোরের রানী ভবানীর জমিদারীর অংশ ছিল। ১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারী নিলামে উঠলে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর মাত্র তের টাকা দশ আনায় এই জমিদারী কিনে নেন। জমিদারীর সাথে সাথে ওই কাছারিবাড়ীও ঠাকুর পরিবারের হস্তগত হয়েছিল বলে ধারনা করা হয়। আগে এই কাছারিবাড়ীর মালিক ছিল নীলকর সাহেবরা। ১৮৯০ সাল থেকে ১৮৯৬ সাল সময়কাল পর্যন্ত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারী দেখাশোনার কাজে শাহজাদপুরে সাময়িকভাবে বসবাস করতেন। তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহে। সম্ভবত এই কারনেই শিলাইদহে তাঁর বাসগৃহ কুঠিবাড়ী নামে এবং শাহজাদপুরের বাড়িটি কাছারিবাড়ি নামে পরিচিত। শাহজাদপুরে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন পালকিতে, নৌকায় ও পায়ে হেঁটে। শাহজাদপুর পৌর এলাকার প্রাণকেন্দ্র দ্বারিয়াপুর বাজারে অবস্থিত উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহত কাপড়ের হাটের দক্ষিণ পাশে এক সবুজ শ্যমল পরিবেশে কাছারিবাড়ির অবস্থান। শাহজাদপুরের কাছারিবাড়ী ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত একটি দ্বিতল ভবন। ভবনটির দৈর্ঘ্য ২৬.৮৫ মিটার ,প্রস্থ ১০.২০ মিটার এবং উচ্চতা ৮.৭৪ মিটার। ভবনটির দ্বোতলার সিঁড়ি ব্যতিত মোট সাতটি কক্ষ রয়েছে। ভবনটির উত্তর দক্ষিণে একই মাপের প্রশস্ত বাড়ান্দা, বাড়ান্দার গোলাকৃতির জোরামাপের খাম, উপরাংশে আছে অলংকরণ করা বড় মাপের দরজা, জানালা ও ছাদের ওপরে প্যারাপেট দেয়ালে পোড়ামাটির শিল্পকর্ম দর্শনাথীদের বিশেষভাবে দৃষ্টি কেড়ে থাকে। ভবনটির জানালা দিয়ে চারপাশের মনোরম, মনোমুগ্ধকর পরিবেশ কবি উপলব্ধি করতেন। কাছারিবাড়িতে বসেই কবি প্রাণভরে ছোট নদী দেখতেন ও শুনতেন ছোটনদীর স্রোতধারার মিশ্রিত সুর। শাহজাদপুরে এসে মানুষ ও প্রকৃতিকে কবি গভীরভাবে ভালবাসেন। এখানে তিনি খুঁজে পান সাহিত্য সৃষ্টির নানা উপাদান। এখানে অবস্থানকালে তিনি রচনা করেন:-কাব্য: সোনারতরী , বৈষ্ণব কবিতা, দুটি পাখি, আকাশের চাঁদ, পুরস্কার, যমুনা, হৃদয়, ভরা ভাদরে, প্রত্যাক্ষান ও লজ্জা। চিত্রা:চিত্রা, শীত ও বসন্তে, নগর সংগীত। চৈতালী: নদীযাত্রা, মৃত্যুমাধুরী, স্মৃতি বিলয়, প্রথম চুম্বন, শেষ চুম্বন, যাত্রী, তৃণ, ঐশ্বর্য, স্বার্থ, প্রেয়সী, শান্তিময়, কালিদাসের প্রতি, কুমার, মানষলোক, কাব্যপ্রার্থনা, ইছামতী নদী, সুশ্রæসা, অশিক্ষাগ্রহন, বিদায়। করুনা: নববিবাহ, রজ্জিতা, বিদায়, হত্যভাগ্যের গান,গতোনিক, বঞ্চনা, সংকোচ, মানষপ্রতিভা, রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা, ব্যবধান, তারাপ্রসন্নের কীর্তি, ছুটি, সম্পত্তি, ক্ষুধিত পাষাণ, অতিথি, ইত্যাদি। ছিন্ন পত্রাবলী: ৩৮ টি বিভিন্ন ছিন্ন পত্রাবলী। প্রবন্ধ:পঞ্চভূতের অংশবিশেষ। নাটক:বিসর্জন।

শাহজাদপুর কাছাড়িবাড়ি দ্বোতলার উত্তর পাশে লিচুগাছ ও শোভা বর্ধনের জন্য নানা ফুলের গাছে ঘেরা কবি গুরুর অপরুপ কাচাড়িবাড়িটি বহুদুরের পথিকেরও দৃষ্টি আকর্ষন করে। কাছারিবাড়ীর চারদিক প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। প্রাচীরের আশেপাশে রয়েছে নানা দৃষ্টিনন্দন বৃক্ষের বাগান। কাছাড়িবাড়ীর ভিতরে একটি বকুলগাছ ছিল। কবি ওই গাছের নীচে বসে কবিতা লিখতেন। ওই বকুলগাছটি মারা গেলে সেখানে আরও একটি বকুলের চারা রোপন করা হয়েছে। সেই চারাটিও দিনদিন বড় হচ্ছে। কবিগুরুর কাছাড়িবাড়ী মিলনায়তনের উত্তর পার্শ্বে কালের স্বাক্ষী হয়ে আজও দাড়িয়ে আসে অভিশপ্ত নীলকুঠি। শাহজাদপুর উপজেলার রবীন্দ্র কাছারিবাড়ী প্রাঙ্গণের অভ্যন্তরে স্থাপিত ইংরেজ নীলকর সাহেবদের অবর্ননীয় অত্যাচার আর নির্যাতন এবং নীলচাষের নির্মম ইতিহাস বিজড়িত ‘নীলকুঠি’ সংস্কারের অভাবে ক্রমেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ীর ভিতরে বর্বরোচিত ঐতিহাসিক নীলকুঠিবাড়ির ধ্বংসবিশেষ আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির উত্তর-পশ্চিম আঙ্গিনা জুড়ে নীলকর সাহেবদের নানা স্মৃতি আজও বিদ্যমান রয়েছে সেখানে। শাহজাদপুরের অধিকাংশ জমিদারীর সিংহভাগই ছিল ইংরেজ নীলকর সাহেবদের নানা স্মৃতিবিজড়িত। অনুমান ১৬০০ থেকে ১৭০০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে ইংরেজ নীলকর সাহেবরা নীলচাষ করতে শাহজাদপুরে এসেছিলেন। ওই সময়ে শাহজাদপুরের দ্বারিয়াপুর ও কান্দাপাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় বিশাল জায়গা জুড়ে নীলকর সাহেবরা তাদের বাসস্থান ও নীলচাষের জন্য প্রশিক্ষন কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন। এটি ওই সময়ে শাহজাদপুর বাসীর নিকট নীল কুঠিবাড়ী হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে ওই কুঠিবাড়ীর পশ্চিম ও পূর্ব আঙ্গিনায় নীলকর সাহেবরা ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলীতে নির্মান করেন দুটি লাল রংয়ের দালান। পূর্ব আঙ্গিনার নীচ ও দ্বোতলাতে নীল কার্যালয় বা হেড অফিস হিসাবে নীলকর সাহেবরা ব্যবহার করতেন। ওইসব ভবনে স্থানীয় কৃষকদের ধরে এনে জোড়পূর্বক নীলচাষে বাধ্য করতে তাদের ওপর অমানুষিক নির্মম নির্যাতন চালাতেন নীলকর বাবুরা। সেই অভিশপ্ত স্মৃতিবিজড়িত নীলকুঠির ধ্বংশবিশেষ আজও কালের স্বাক্ষী হিসাবে এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সংস্কারের অভাবে ইতিহাসে বর্বরোচিত ইন্দো-ইউরোপীয় শৈলীতে নির্মিত ‘নীলকুঠি’ ক্রমেই নষ্ট হচ্ছে।

১৯৬৯ সালে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক অত্যন্ত জরাজীর্ণ অবস্থায় ওই ভবনটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসাবে ঘোষনা করা হয়। ওই ভবনটির বিভিন্ন সংস্কার করে ভবনটিতে রবীন্দ্রভিত্তিক আলোকচিত্র ও এ বাড়িতে কবির ব্যবহৃত প্রাপ্ত আসবাপত্র নিয়ে একটি স্মৃতি যাদুঘরের রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। দক্ষিন দিকের দরজা দিয়ে ওই যাদুঘরে প্রবেশ করতে হয়। নিচতলা ও দ্বোতলার বিশাল হলরূমসহ যাদুঘরের সকল কক্ষ সর্বসাধারনের জন্য উন্মুক্ত।চারদিকে পাঁকা দেয়ালে বেষ্ঠিত কাচাড়িবাড়ির আঙ্গিনাটিও বেশ বড়। এখানে রয়েছে রবীন্দ্র মিলনায়তন, কবির ব্যবহৃত সামগ্রীর মধে চৌকি, লেখার জন্য ডেস্ক, সোফাসেট, আরাম কেদারা, আলনা, আলমারি, সিন্দুক, ঘাস কাটার যন্ত্র, ওয়াটার ফিল্টার, ল্যাম্প, কবির স্বহস্তে আঁকা ছবি, দেশী বিদেশী রাষ্ট্রনায়ক, বিজ্ঞানীসহ গুণীজনদের সাথে কবির অগনিত ছবি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেঘেরা আম, জাম, জামিনি, কামিনি, বকুল গাছের সুশীতল ছায়া কবিগুরুর এসব অতীত স্মৃতি আর নেই। হারিয়ে গেছে স্মৃতির পট থেকে। কবির স্মৃতিবিজড়িত বকুলগাছ মারা গেছে। বকুলগাছের পুবদিকে একটি ইঁদারা ছিল যা ভরাট হয়ে গেছে। পূর্বদিকের দ্বোতলায় ওঠার সিঁড়িটি অনেক আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ‘আমাদের ছোটনদী চলে বাঁকে বাঁকে’ কবির সেই স্মৃতিবিজড়িত ছোট নদী অনেক আগেই মরে গেছে। ’৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক বই ও পান্ডুলিপি খোয়া গেছে।

এখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য নির্মান করা হয়েছে একটি বিশাল ও অত্যাধুনিক মিলনায়তন। কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতি বছরই সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন ২৫,২৬ ও ২৭ বৈশাখ এ তিনদিন ব্যাপী নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে কাছাড়িবাড়ীতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়। ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে কাছারিবাড়ীর কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তিনদিনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে থাকে রবীন্দ্র সংগীত, নৃত্য, কবিতা আবৃতি, কবিতালেখ্য, গীতিনৃত্য, গীতিনাট্য, নাটক, গ্রামীণ মেলা, রক্তদান কর্মসূচী, আলোচনাসভা, প্রবন্ধ পাঠসহ নানা আয়োজন। এই তিনদিনের ব্যাপক অনুষ্ঠান মালাকে ঘিরে পুরো শাহজাদপুর উৎসবের আমেজে মেতে ওঠে। এ উপলক্ষে শাহজাদপুররে বসে গ্রামীণ মেলা । দেশের সর্বপ্রথম কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষ্কর্য নির্মিত হয়েছে শাহজাদপুরের বিসিক বাসষ্ট্যান্ডে। শাহজাদপুর উপজেলার বিসিক বাসষ্ট্যান্ড মোড়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাস্কর্য নির্মানের কাজ শুরু করা হয়েছিল। এ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চয়ন ইসলাম। দেশের খ্যাতিমান ভাষ্কর্য নির্মাতা মৃণাল হক এই ভাষ্কর্য নির্মাণ করেছেন। ২৫ বৈশাখ রোববার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবার্র্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান শুরুর প্রাক্কালে সাবেক মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ভাষ্কর্যটি উদ্বোধন করেন।