ঢাকা ১০:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আর দেখা মেলেনা প্রাকৃতিক স্থপতি বাবুই পাখির বাসা!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১৬:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৬৪৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// চন্দন সরকার, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে //  

কবি রজনীকান্ত সেনের কালজয়ী সৃষ্টি ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতার কথা কারোরই অজানা নেই। কবিতাটির কথা মনে পড়লেই বাবুই পাখির কথা মনে পড়ে। এখন ওই পাখির নাম শুনলেই কেমন যেন অচেনা অচেনা মনে হয়। বাবুই পাখির বসবাস অস্তিত্ব এখন কেবলই কাগজে কলমে (ছড়ার বইতে) সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। কালের আবর্তে সময়ের পরিধিতে দেশপট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ওই বাবুই পাখির বাসা।

অতীতকালে সিরাজগঞ্জ, পাবনা, রংপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, চাপাইনবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, নাটোর, নওগাঁ, রাজশাহী, দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলসহ দেশের গাঁও গেরামে মাঠে, ঘাটে, আঁকাবাঁকা মেঠোপথে সারি সারি তাল, শুপারি, নারকেল ও খেজুর গাছে প্রচুর পরিমান বাবুই পাখির বসবাস ছিল।

কিন্তু বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে এ পাখি বর্তমানে আর খুব একটা দেখা যায় না। বাবুই পাখিরই অস্তিত্ব যেখানে বিলীন, সেখানে বাবুই পাখির বাসা নিছক অলীক কল্পনায়ই বটে। এ পাখি যেনো প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমান প্রজন্ম ও শহরের অনেকেই ক্ষুদে পরিশ্রমী এ শিল্পীর বাসা দেখেননি। তবে শহর এলাকায় এখনও মাঝে মধ্যে বাবুই পাখির বাসা বিক্রি হতে দেখা যায়, যার স্থান মেলে শহরের বিভিন্ন আবাসিক বাসভবনের দৃষ্টিনন্দন শো’কেজ এ। আবার অনেকে বাবুই পাখির বাসা তাদের ড্রইংরুমে সাজিয়ে রাখে। কালক্রমে ঐহিত্যবাহী ওই বাবুই পাখির বাসা আর বর্তমানে গ্রামীণ জনপদেও সচারচার দেখা যায় না। নির্বিচারে বন উজাড়, নতুন বনায়নে বাসযোগ্য পরিবেশ ও খাদ্যের অভাব ও অসাধু শিকারীর ফাঁদসহ বহুবিধ কারণে প্রাকৃতিক স্থপতি বাবুই পাখি ক্রমান্বয়ে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। বাবুই পাখিকে সামাজিক বন্ধনের প্রতীক মনে করা হলেও রক্ষায় নেই কোন উদ্যোগ। যন্ত্রনীর্ভর অধুনিককালে প্রাকৃতিক সব কিছুই দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আহবমান গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী ওই পাখি টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদেরই। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় এদের বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। তাহলেই এ পাখি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে বলে বিজ্ঞমহল মনে করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আর দেখা মেলেনা প্রাকৃতিক স্থপতি বাবুই পাখির বাসা!

আপডেট সময় : ১১:১৬:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

// চন্দন সরকার, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে //  

কবি রজনীকান্ত সেনের কালজয়ী সৃষ্টি ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতার কথা কারোরই অজানা নেই। কবিতাটির কথা মনে পড়লেই বাবুই পাখির কথা মনে পড়ে। এখন ওই পাখির নাম শুনলেই কেমন যেন অচেনা অচেনা মনে হয়। বাবুই পাখির বসবাস অস্তিত্ব এখন কেবলই কাগজে কলমে (ছড়ার বইতে) সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। কালের আবর্তে সময়ের পরিধিতে দেশপট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ওই বাবুই পাখির বাসা।

অতীতকালে সিরাজগঞ্জ, পাবনা, রংপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, চাপাইনবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, নাটোর, নওগাঁ, রাজশাহী, দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলসহ দেশের গাঁও গেরামে মাঠে, ঘাটে, আঁকাবাঁকা মেঠোপথে সারি সারি তাল, শুপারি, নারকেল ও খেজুর গাছে প্রচুর পরিমান বাবুই পাখির বসবাস ছিল।

কিন্তু বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে এ পাখি বর্তমানে আর খুব একটা দেখা যায় না। বাবুই পাখিরই অস্তিত্ব যেখানে বিলীন, সেখানে বাবুই পাখির বাসা নিছক অলীক কল্পনায়ই বটে। এ পাখি যেনো প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমান প্রজন্ম ও শহরের অনেকেই ক্ষুদে পরিশ্রমী এ শিল্পীর বাসা দেখেননি। তবে শহর এলাকায় এখনও মাঝে মধ্যে বাবুই পাখির বাসা বিক্রি হতে দেখা যায়, যার স্থান মেলে শহরের বিভিন্ন আবাসিক বাসভবনের দৃষ্টিনন্দন শো’কেজ এ। আবার অনেকে বাবুই পাখির বাসা তাদের ড্রইংরুমে সাজিয়ে রাখে। কালক্রমে ঐহিত্যবাহী ওই বাবুই পাখির বাসা আর বর্তমানে গ্রামীণ জনপদেও সচারচার দেখা যায় না। নির্বিচারে বন উজাড়, নতুন বনায়নে বাসযোগ্য পরিবেশ ও খাদ্যের অভাব ও অসাধু শিকারীর ফাঁদসহ বহুবিধ কারণে প্রাকৃতিক স্থপতি বাবুই পাখি ক্রমান্বয়ে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। বাবুই পাখিকে সামাজিক বন্ধনের প্রতীক মনে করা হলেও রক্ষায় নেই কোন উদ্যোগ। যন্ত্রনীর্ভর অধুনিককালে প্রাকৃতিক সব কিছুই দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আহবমান গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী ওই পাখি টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদেরই। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় এদের বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। তাহলেই এ পাখি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে বলে বিজ্ঞমহল মনে করেন।