ঢাকা ০৬:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

অনুদান নয়, স্বল্পোন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রাপ্য চায় : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:১০:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৭২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনুদান নয়, স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রকৃত কাঠামোগত রূপান্তরের জন্য তাদের প্রাপ্য চায়।

রোববার (৫ মার্চ) কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি ৫ : সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধি) ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি যে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোও দর কষাকষিতে তাদের পক্ষ রাখবে। আমাদের দেশগুলো দান চায় না; আমরা যা চাই তা হলো আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির অধীনে আমাদের পাওনা।

তিনি বলেন, দোহা কর্মসূচি বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য আশার আরেকটি আশ্বাস। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই এলডিসিতে বাস্তব কাঠামোগত রূপান্তরের জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এলডিসিতে উত্তরণে তাদের পারফরম্যান্সের জন্য কিছু প্রণোদনা থাকা উচিত। তাদের একটি বর্ধিত সময়ের জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর আন্তর্জাতিক সহায়তা ভোগ করা উচিত। তাদের উন্নত বিনিয়োগ এবং উৎপাদনশীল সক্ষমতা কীভাবে তৈরি করা যায় তা জানতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের জন্য কিছু উদ্ভাবনী ও ক্রান্তিকালীন অর্থায়ন ব্যবস্থা থাকতে পারে। তবে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বৈশ্বিক বাণিজ্যে তাদের অংশ দ্বিগুণ করার জন্য টেকসই সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোর এলডিসির জন্য ওডিএ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে ঋণ টেকসই করার জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যম রয়েছে।

এলডিসিগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নকে নমনীয় এবং অনুমানযোগ্য করা উচিত। এলডিসিগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তর বাস্তব এবং অর্থপূর্ণ হওয়া দরকার। আমাদের অভিবাসী শ্রমিকদের তাদের অধিকার এবং মঙ্গলের জন্য সুরক্ষা প্রয়োজন। আমরা এলডিসিতে ২২৬ মিলিয়ন যুবকদের ব্যর্থ করতে পারি না, তিনি যোগ করেন।

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারি এবং তারপর ইউক্রেনের যুদ্ধ এলডিসি অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে অধিকাংশ স্বল্পোন্নত দেশে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, জলবায়ু সংকট এবং কিছু স্বল্পোন্নত দেশে দীর্ঘকাল ধরে টানা সংঘাত।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের গল্পের বেশিরভাগ অংশই আমরা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য আলোচনা করেছিলাম এবং সহযোগিতার জন্য আমাদের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেছি।

তিনি বলেন, বেশিরভাগ উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতি থেকে আমরা যে শুল্ক এবং কোটা-মুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছি তা আমাদের বেসরকারি খাতকে একটি দৃঢ় উৎপাদন ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ট্রিপস চুক্তির অধীনে প্রদত্ত পেটেন্ট মওকুফ সুবিধা স্থানীয়ভাবে আমাদের ওষুধের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করার সুযোগ করে দিয়েছে।

জোরপূর্বক বিতাড়িত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের বিষয়ে সরকার প্রধান বলেন, আমরা জোরপূর্বক বিতাড়িত ১ দশমিক ২ মিলিয়ন বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছে। এর তাৎক্ষণিক কোনো সমাধান নেই।

বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এখন ২০২৬ সালের দিকে তাকিয়ে আছি। জিডিপির ভিত্তিতে বিশ্বের বড় ৫০টি অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ একমাত্র স্বল্পোন্নত দেশ। আমরা সার্বজনীন ও টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। এ সময় গত এক দশকে বাংলাদেশে দারিদ্রের হার ৩১ দশমিক ৫ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশের সফলতার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে গড়ার পর আগামীতে আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া।

কাতার জাতীয় কনভেনশন সেন্টারে পঞ্চম জাতিসংঘ এলডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্য দেন দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট সাবা কোরেসি, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট লাচেজারা স্টোয়েভা এবং মালয়ের প্রেসিডেন্ট এলডিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান লাজারাস ম্যাকার্থি চাকাওয়েরা।

এর আগে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে শনিবার (৪ মার্চ) এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে দোহা আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ৮ মার্চ দেশে ফিরবেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

অনুদান নয়, স্বল্পোন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রাপ্য চায় : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৭:১০:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনুদান নয়, স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রকৃত কাঠামোগত রূপান্তরের জন্য তাদের প্রাপ্য চায়।

রোববার (৫ মার্চ) কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি ৫ : সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধি) ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি যে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোও দর কষাকষিতে তাদের পক্ষ রাখবে। আমাদের দেশগুলো দান চায় না; আমরা যা চাই তা হলো আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির অধীনে আমাদের পাওনা।

তিনি বলেন, দোহা কর্মসূচি বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য আশার আরেকটি আশ্বাস। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই এলডিসিতে বাস্তব কাঠামোগত রূপান্তরের জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এলডিসিতে উত্তরণে তাদের পারফরম্যান্সের জন্য কিছু প্রণোদনা থাকা উচিত। তাদের একটি বর্ধিত সময়ের জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর আন্তর্জাতিক সহায়তা ভোগ করা উচিত। তাদের উন্নত বিনিয়োগ এবং উৎপাদনশীল সক্ষমতা কীভাবে তৈরি করা যায় তা জানতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের জন্য কিছু উদ্ভাবনী ও ক্রান্তিকালীন অর্থায়ন ব্যবস্থা থাকতে পারে। তবে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বৈশ্বিক বাণিজ্যে তাদের অংশ দ্বিগুণ করার জন্য টেকসই সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোর এলডিসির জন্য ওডিএ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে ঋণ টেকসই করার জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যম রয়েছে।

এলডিসিগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নকে নমনীয় এবং অনুমানযোগ্য করা উচিত। এলডিসিগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তর বাস্তব এবং অর্থপূর্ণ হওয়া দরকার। আমাদের অভিবাসী শ্রমিকদের তাদের অধিকার এবং মঙ্গলের জন্য সুরক্ষা প্রয়োজন। আমরা এলডিসিতে ২২৬ মিলিয়ন যুবকদের ব্যর্থ করতে পারি না, তিনি যোগ করেন।

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারি এবং তারপর ইউক্রেনের যুদ্ধ এলডিসি অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে অধিকাংশ স্বল্পোন্নত দেশে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, জলবায়ু সংকট এবং কিছু স্বল্পোন্নত দেশে দীর্ঘকাল ধরে টানা সংঘাত।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের গল্পের বেশিরভাগ অংশই আমরা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য আলোচনা করেছিলাম এবং সহযোগিতার জন্য আমাদের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেছি।

তিনি বলেন, বেশিরভাগ উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতি থেকে আমরা যে শুল্ক এবং কোটা-মুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছি তা আমাদের বেসরকারি খাতকে একটি দৃঢ় উৎপাদন ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ট্রিপস চুক্তির অধীনে প্রদত্ত পেটেন্ট মওকুফ সুবিধা স্থানীয়ভাবে আমাদের ওষুধের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করার সুযোগ করে দিয়েছে।

জোরপূর্বক বিতাড়িত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের বিষয়ে সরকার প্রধান বলেন, আমরা জোরপূর্বক বিতাড়িত ১ দশমিক ২ মিলিয়ন বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছে। এর তাৎক্ষণিক কোনো সমাধান নেই।

বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এখন ২০২৬ সালের দিকে তাকিয়ে আছি। জিডিপির ভিত্তিতে বিশ্বের বড় ৫০টি অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ একমাত্র স্বল্পোন্নত দেশ। আমরা সার্বজনীন ও টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। এ সময় গত এক দশকে বাংলাদেশে দারিদ্রের হার ৩১ দশমিক ৫ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশের সফলতার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে গড়ার পর আগামীতে আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া।

কাতার জাতীয় কনভেনশন সেন্টারে পঞ্চম জাতিসংঘ এলডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্য দেন দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট সাবা কোরেসি, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট লাচেজারা স্টোয়েভা এবং মালয়ের প্রেসিডেন্ট এলডিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান লাজারাস ম্যাকার্থি চাকাওয়েরা।

এর আগে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে শনিবার (৪ মার্চ) এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে দোহা আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ৮ মার্চ দেশে ফিরবেন তিনি।