ঢাকা ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

অক্টোবরের দ্বিতীয়ার্ধ্ব পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু বাড়ার শঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:২৫:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৪৪৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। গবেষকরা বলছেন, সংক্রমণ রোধে ডেঙ্গুর হটস্পটগুলো চিহ্নিত করতে হবে। না হলে অক্টোবরের দ্বিতীয়ার্ধ্ব পর্যন্ত ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে মৃত্যু। অন্যদিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো বলছে, হাসপাতাল থেকে যথাযথ তথ্য না পাওয়ায় হটস্পট চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

আজিমপুর সরকারি আবাসন এলাকায় এখনও অন্তত ১৫টি বাড়িতে নির্মাণকাজ অব্যাহত রয়েছে। যেখানে প্রতিটি বাড়ির বেজমেন্টসহ নানা স্থানে পানি জমে আছে। এখানে মশার অবাধ বিচরণ স্পষ্ট দেখা যায়। যেগুলোকে মশার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। নির্মাণাধীন ভবন ঘিরে নেই ন্যূনতম সতর্কতা। যত্রতত্র জমে আছে পানি। কোথাও কোথাও ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

এসব ভবনের বেজমেন্টে বছরজুড়ে জমে থাকে হাঁটু সমান পানি। যেখানে অবাধ বিচরণ দেখা গেছে ব্যাঙসহ বিভিন্ন কীটপতঙ্গের। নির্মাণ শ্রমিকরা জানালেন মশার উৎপাতে কোথাও স্থির হয়ে বসা যায় না। এরইমধ্যে অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।

একজন শ্রমিক বলেন, ‘এই পানি অনেক দিনের পুরোনো। পরিস্কার করা হয় না ঠিকমতো। সেজন্য ওখান থেকে মশা হয়। সন্ধ্যার পর আমরা মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। আমাদের শ্রমিকদের মধ্যে এখনও তিনজন অসুস্থ। তারা কাজ করতে পারছে না, পরে বাড়িতে চলে গেছে।’

সারাদেশে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। গবেষকরা বলছেন, সংক্রমণ রোধে ডেঙ্গুর হটস্পট চিহ্নিত করতে হবে। যা করা না গেলে অক্টোবরের দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত ডেঙ্গু সংক্রমণ ক্রমাগত বাড়বে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জোরালো পদক্ষেপ নেয়া দরকার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘পুরো সেপ্টেম্বরজুড়েই ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ থাকবে। যদি আমরা সঠিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারি। এই মুহূর্তে যেটি করণীয় সেটি হচ্ছে হটস্পট ম্যানেজমেন্ট। যে বাড়িতে ডেঙ্গু রোগী আছে, সেই বাড়ির চারদিকে ২০০ মিটারকে কেন্দ্র করে ফগিং করে উড়ন্ত মশা মেরে দিতে হবে।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ৮০ শতাংশ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৭৫ শতাংশ কাউন্সিলর এখনও কাজে ফেরেনি। স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের এমন অনুপস্থিতে বেড়েছে মশার প্রাদুর্ভাব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বাড়বে ডেঙ্গু রোগী বাড়বে মৃত্যু।

হটস্পট চিহ্নিত করতে কাজ শুরু করার কথা জানালো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে যথাযথ তথ্য পাওয়ার ঘাটতি রয়েছে।

ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘হটস্পটের বিষয়গুলো আমাদের যখনই স্বাস্থ্য বিভাগ বা কোনো গবেষণালব্ধ প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়। আমাদের বিভিন্ন কীট আমাদের সরবরাহ করে, আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান করি। আমরা সেই এলাকাটা নিরবিচ্ছিন্নভাবে ফগিং এবং লার্ভাসাইটিং করে থাকি। বিশেষভাবে সোর্স রিডাকশনকে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি।’

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি হিসেবে ধরা হয় নজরদারি। এ বছর হরহামেশাই বৃষ্টিপাতের কারণে এডিসের প্রজননে সহায়ক হচ্ছে জমে থাকা স্বচ্ছ পানি।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগের পাশাপাশি সারা বছরই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করা দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

অক্টোবরের দ্বিতীয়ার্ধ্ব পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু বাড়ার শঙ্কা

আপডেট সময় : ০২:২৫:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। গবেষকরা বলছেন, সংক্রমণ রোধে ডেঙ্গুর হটস্পটগুলো চিহ্নিত করতে হবে। না হলে অক্টোবরের দ্বিতীয়ার্ধ্ব পর্যন্ত ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে মৃত্যু। অন্যদিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো বলছে, হাসপাতাল থেকে যথাযথ তথ্য না পাওয়ায় হটস্পট চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

আজিমপুর সরকারি আবাসন এলাকায় এখনও অন্তত ১৫টি বাড়িতে নির্মাণকাজ অব্যাহত রয়েছে। যেখানে প্রতিটি বাড়ির বেজমেন্টসহ নানা স্থানে পানি জমে আছে। এখানে মশার অবাধ বিচরণ স্পষ্ট দেখা যায়। যেগুলোকে মশার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। নির্মাণাধীন ভবন ঘিরে নেই ন্যূনতম সতর্কতা। যত্রতত্র জমে আছে পানি। কোথাও কোথাও ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

এসব ভবনের বেজমেন্টে বছরজুড়ে জমে থাকে হাঁটু সমান পানি। যেখানে অবাধ বিচরণ দেখা গেছে ব্যাঙসহ বিভিন্ন কীটপতঙ্গের। নির্মাণ শ্রমিকরা জানালেন মশার উৎপাতে কোথাও স্থির হয়ে বসা যায় না। এরইমধ্যে অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।

একজন শ্রমিক বলেন, ‘এই পানি অনেক দিনের পুরোনো। পরিস্কার করা হয় না ঠিকমতো। সেজন্য ওখান থেকে মশা হয়। সন্ধ্যার পর আমরা মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। আমাদের শ্রমিকদের মধ্যে এখনও তিনজন অসুস্থ। তারা কাজ করতে পারছে না, পরে বাড়িতে চলে গেছে।’

সারাদেশে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। গবেষকরা বলছেন, সংক্রমণ রোধে ডেঙ্গুর হটস্পট চিহ্নিত করতে হবে। যা করা না গেলে অক্টোবরের দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত ডেঙ্গু সংক্রমণ ক্রমাগত বাড়বে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জোরালো পদক্ষেপ নেয়া দরকার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘পুরো সেপ্টেম্বরজুড়েই ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ থাকবে। যদি আমরা সঠিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারি। এই মুহূর্তে যেটি করণীয় সেটি হচ্ছে হটস্পট ম্যানেজমেন্ট। যে বাড়িতে ডেঙ্গু রোগী আছে, সেই বাড়ির চারদিকে ২০০ মিটারকে কেন্দ্র করে ফগিং করে উড়ন্ত মশা মেরে দিতে হবে।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ৮০ শতাংশ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৭৫ শতাংশ কাউন্সিলর এখনও কাজে ফেরেনি। স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের এমন অনুপস্থিতে বেড়েছে মশার প্রাদুর্ভাব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বাড়বে ডেঙ্গু রোগী বাড়বে মৃত্যু।

হটস্পট চিহ্নিত করতে কাজ শুরু করার কথা জানালো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে যথাযথ তথ্য পাওয়ার ঘাটতি রয়েছে।

ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘হটস্পটের বিষয়গুলো আমাদের যখনই স্বাস্থ্য বিভাগ বা কোনো গবেষণালব্ধ প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়। আমাদের বিভিন্ন কীট আমাদের সরবরাহ করে, আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান করি। আমরা সেই এলাকাটা নিরবিচ্ছিন্নভাবে ফগিং এবং লার্ভাসাইটিং করে থাকি। বিশেষভাবে সোর্স রিডাকশনকে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি।’

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি হিসেবে ধরা হয় নজরদারি। এ বছর হরহামেশাই বৃষ্টিপাতের কারণে এডিসের প্রজননে সহায়ক হচ্ছে জমে থাকা স্বচ্ছ পানি।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগের পাশাপাশি সারা বছরই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করা দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।